মুখপাত্র: ২০ বছর আগেই নিন্দা জানিয়েছিল তালেবান

তালেবান ২০ বছর আগেই নাইন-ইলেভেন হামলার নিন্দা জানিয়েছিল। সে সময় তারা এ-ও জানিয়েছিল, কোনো আফগান এ হামলায় জড়িত নয়। শনিবার প্রচারিত জিরগা অনুষ্ঠানে জিও নিউজের সাথে এক সাক্ষাৎকারে তালেবান মুখপাত্র সুহাইল শাহিন এ দাবি করেন।

তালেবান মুখপাত্র সুহাইল শাহিন

দোহায় তালেবানের এ মুখপাত্র বলেন, আমার মনে আছে আমরা এই ঘটনার নিন্দা জানিয়েছি। সে সময় আব্দুল সালাম জাইফ ছিলেন পাকিস্তানে নিয়োজিত রাষ্ট্রদূত এবং আমি তার সহযোগী ছিলাম। তখন আমরা একটি সংবাদ সম্মেলন ডেকে সেখানে এ ঘটনার নিন্দা জানিয়েছি। বলেছিলাম, আমরা এর পেছনের আসল ঘটনা বের করতে সহযোগিতা করব।

শাহিন বলেন, আমরা তখন অনুরোধ করেছিলাম, বিষয়টি আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা হোক। আফগানিস্তানে হামলা চালাবেন না। এখন ওই হামলার ফল আপনাদের সামনে উপস্থিত।

বিমান হামলায় আক্রান্ত টুইন টাওয়ার, ফাইল ছবি

আমরা তাদেরকে বলেছিলাম, এটি আপনাদের জন্যও কোনো ভাল ফল আনতে পারবে না। হামলা হলে তা দীর্ঘদিন চলবে এবং এতে অনেক লোক হতাহত হবে। তাই আমরা এটি চাইনি। কিন্তু তারা আমাদের কথার মূল্যায়ন করেনি। তারা অত্যাধুনিক অস্ত্রের মাধ্যমে আফগানিস্তান দখল করেছে। এক সময় যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের দেড় লাখের বেশি সৈন্য আফগানিস্তানে ছিল। কিন্তু ফল সেটাই হয়েছে, যা আমরা ২০ বছর আগে তাদেরকে সতর্ক করে জানিয়েছিলাম। এখন জনগণের সমর্থন নিয়ে আমরা আবারো আমাদের স্বাধীনতা ফিরে পেয়েছি।

এক প্রশ্নের জবাবে শাহিন বলেন, আল কায়েদা তখন এ ধরনের পদক্ষেপের ব্যাপারে আফগানিস্তান বা মোল্লা ওমরের ওপর আস্থা রাখতে পারেনি। আফগানিস্তানের ক্ষমতায় থাকা তালেবানও তাদের কাছে গুরুত্বহীন ছিল।

বর্তমান প্রশাসনের কথা বলতে গিয়ে শাহিন বলেন, এবার আফগানিস্তান নিয়ন্ত্রণে নেয়ার পর তালেবান একটি নীতি তৈরি করেছে, যাতে এ মাটি কেউ অন্য কোনো দেশের বিরুদ্ধে ব্যবহার করতে না পারে।

তার এ বক্তব্যের ব্যাপারে গ্যারান্টি চাওয়া হলে তিনি বলেন, এ কারণেই আমরা আফগানিস্তানে কোনো বিদেশির উপস্থিতি চাই না। আমরা এ ক্ষেত্রে যে ঝুঁকির আশঙ্কা করছি, তা আপনি নিজেই তুলে ধরেছেন। এ ব্যাপারে আমরা একটি নীতি তৈরি করেছি, আমরা একটি আইনও করব, নজরদারি করব। আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী, আমাদের গোয়েন্দা বাহিনী আরো সক্রিয় হবে।

তালেবানের এ মুখপাত্রকে জিজ্ঞাসা করা হয়, বর্তমানে আফগানিস্তানে কতজন আল কায়েদা কর্মী রয়েছে। বিশেষ করে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রতিবেদনে যখন এক্ষেত্রে ‘শত শত’ সংখ্যা উল্লেখ করা হয়েছে। এর জবাবে শাহিন বলেন, আমরা খুব ভালোভাবেই জানি কোন কোন দেশ এ ধরনের রিপোর্টের কাঁচামাল সরবরাহ করে। আমরা বারবার এ ধরনের ভিত্তিহীন দাবি প্রত্যাখ্যান করেছি। পাশাপাশি আমরা দোহায় প্রতিশ্রুতি দিয়েছি, আমাদের দেশে এ ধরনের কোনো তহবিল সংগ্রহ, প্রশিক্ষণ বা নিয়োগ কেন্দ্রকে কাজ করতে দেবো না।

সূত্র: জিও টিভি