ইমরান: আফগানিস্তানে উত্তেজনা বাড়ানোর চেষ্টা পরিত্যাগ করতে হবে

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেছেন, আফগানিস্তানের তালেবানকে ‘দানব’ বানানো এবং সেদেশে অভ্যন্তরীণ উত্তেজনা বাড়ানোর চেষ্টা পরিত্যাগ করতে হবে। আফগানিস্তানের টেকসই শান্তির লক্ষ্যে বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি শুক্রবার এ আহ্বান জানান তিনি।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান

কালেক্টিভ সিকিউরিটি ট্রিটি অর্গানাইজেশন (সিএসটিও) শীর্ষ সম্মেলনে ভাষণদানকালে ইমরান বলেন, কোনো ধরনের অপরিণামদর্শী দৃষ্টিভঙ্গি এই অঞ্চলের চ্যালেঞ্জগুলোকে আরো বাড়িয়ে তুলবে। কিন্তু কোনো সমাধান আনবে না।

তিনি বলেন, কয়েক দশকের যুদ্ধের পর যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিতে শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার একটি সুস্পষ্ট সম্ভাবনা পাওয়া গিয়েছিল। তারই পরিপ্রেক্ষিতে আফগানিস্তানের এই সংকটময় মুহূর্তে দেশটি থেকে গৃহযুদ্ধ ও অর্থনৈতিক মন্দা দূর করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছিল। এখন বিশ্বের হাতে আফগানিস্তানের ব্যাপারে দুটি বিকল্প রয়েছে। হয় তাদের পরিত্যাগ করুন অথবা যেকোনো মানবিক বিপর্যয় এড়াতে এর সাথে যুক্ত থাকুন।

তালেবান নেতৃবৃন্দ

যদি বিশ্ব এ পর্যায়ে তালেবান নেতৃত্বাধীন সরকারের সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে অস্বীকার করে, তাহলে আফগানিস্তানের জনগণ ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তারা আবারো গৃহযুদ্ধ, শরণার্থীদের নির্বাসন, মাদক পাচার এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ সংগঠনের দিতে এগিয়ে যেতে পারে। অন্যদিকে, একটি স্থিতিশীল আফগানিস্তান পুরো অঞ্চলে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে পারবে।

ভাষণে ইমরান খান আরও বলেন, যদিও তালেবানের কাবুল দখল কোনো ধরনের রক্তপাত ছাড়াই হয়েছিল এবং গৃহযুদ্ধের সম্ভাবনাও এড়ানো গিয়েছিল, কিন্তু দেশটি এখনো মানবিক সঙ্কট এবং অর্থনৈতিক মন্দার মুখোমুখি। দেশটির জন্য যা এক ভয়ঙ্কর ও জরুরি বাস্তবতা। এ অবস্থায় বৈদেশিক সাহায্যের ওপর নির্ভরশীল দেশ থেকে আফগানিস্তানকে একটি টেকসই অর্থনীতিতে রূপান্তর দেশটির সরকারের জন্য আরেকটি বৃহৎ চ্যালেঞ্জ।

এ সময় তালেবানকে লক্ষ্য করে তিনি বলেন, দেশে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকার নিশ্চিত করার জন্য তালেবানকে অবশ্যই সম্ভাব্য প্রতিটি পদক্ষেপ নিতে হবে। পাশাপাশি তাদের এটাও নিশ্চিত করতে হবে যেন আফগান মাটি কোনো দেশের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কাজে ব্যবহার না হয়।

ইমরান বলেন, তালেবানকে ধ্বংস করার প্রচেষ্টার অবসান হওয়া উচিত। কারণ এই পদ্ধতিটি আফগানিস্তানের চলমান চ্যালেঞ্জগুলোকে আরো জটিল করে তুলবে। বরং দেশটিকে স্থিতিশীল করার প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে সেখানে নতুন করে সংঘর্ষ রোধ করার জন্য একটি সম্মিলিত প্রচেষ্টা থাকা উচিত।

পাকিস্তানের সাথে আফগানিস্তানের সর্বশেষ পরিস্থিতি বর্ণনা করতে গিয়ে তিনি বলেন, পাকিস্তান তালেবানের সঙ্গে গঠনমূলক সম্পৃক্ততা অব্যাহত রেখেছে এবং আফগান সীমান্তের সাথে দ্বিপাক্ষিক ও ট্রানজিট বাণিজ্য খোলা রয়েছে। পাকিস্তান একটি সার্বভৌম আফগানিস্তানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যা নিজের এবং প্রতিবেশীদের সঙ্গে শান্তিতে থাকবে।

সূত্র: দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন