জাতিসংঘে পারমাণবিক চুক্তি নিয়ে বৈঠক হচ্ছে না

ইরানের পারমাণবিক চুক্তির বিষয়ে জাতিসংঘে কোনো বৈঠক হচ্ছে না। ব্রিটেন, চীন, ফ্রান্স, জার্মানি এবং রাশিয়ার মন্ত্রীরা এ বিষয়ে কোনো বৈঠকে বসবেন না বলে সোমবার, ২০ সেপ্টেম্বর, সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের, ইইউ, পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক প্রধান জোসেপ বোরেল।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক প্রধান জোসেপ বোরেল

রয়টার্স বলছে, জাতিসংঘের ৭৬তম সাধারণ অধিবেশন চলছে। এই সম্মেলনের ফাঁকে বুধবার কূটনীতিকরা ২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তির ব্যাপারে মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকের পরিকল্পনা করেছিলেন। পারমাণবিক চুক্তির সমন্বয়ক হিসেবে বোরেল বলেন, এবারের কর্মসূচিতে এটি নেই। জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে মাঝে মাঝে এ বিষয়টি কর্মসূচিতে রাখা হয়। কিন্তু এ বছর ইরানের পরমাণু চুক্তির বিষয়ে কোনো বৈঠকের কথা কর্মসূচিতে নেই।

জয়েন্ট কমপ্রিহেনসিভ প্ল্যান অফ অ্যাকশন (জেসিপিওএ) নামে পরিচিত এই চুক্তির বিষয়ে বোরেল বলেন, মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভিয়েনার বৈঠক। এই বৈঠকের ব্যাপারে সব পক্ষ একমত রয়েছেন। এ ব্যাপারে তিনি ইরানের নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির আব্দুল্লাহিয়ানের সঙ্গে মঙ্গলবার দেখা করবেন বলেও জানান।

খবরে বলা হচ্ছে, জেসিপিওএ বাস্তবায়নের জন্য বিশ্ব নেতারা ইতোমধ্যে ছয় দফা বৈঠক করেছেন ভিয়েনায়। কিভাবে চুক্তিটি পুনরায় বহাল করা যায় সেই চেষ্টা ছিল সবসময়। ২০১৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রসহ ছয় জাতিগোষ্ঠীর সঙ্গে চুক্তিটি সম্পাদন করা হয়। কিন্তু তিন বছর পর তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চুক্তি থেকে বেরিয়ে যান এবং ইরানের ওপর আবার কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। এতে ইরান পরমাণু কর্মসূচির শর্ত লঙ্ঘন করতে শুরু করে। তবে তেহরান বরাবরই বলে আসছে পারমাণবিক কর্মসূচি শুধু শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে।

কট্টরপন্থী ইব্রাহিম রাইসি ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত ও আগস্টে ক্ষমতা গ্রহণের পর ভিয়েনা আলোচনায় ভাটা পড়ে। তবে বোরেল বলেছিলেন, তিনি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আলোচনা পুনরায় শুরু করতে আমির আবদুল্লাহিয়ানকে চাপ দেবেন।

তিনি আরও বলছেন, নির্বাচনের পর নতুন রাষ্ট্রপতি ইব্রাহিম রাইসি বলেছিলেন নতুন দায়িত্ব নেওয়ায় খোঁজখবর নিয়ে তারপর তিনি আলোচনার ব্যাপারে মনোযোগ দেবেন। কিন্তু খানিকটা সময় ইতোমধ্যে কেটে গেছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, শিগগির ভিয়েনায় পারমাণবিক চুক্তির পুনর্বহালের বিষয়ে আবারও বৈঠক হবে।

এর আগে ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাঁ-ইভেস লে ড্রায়ান সোমবার জাতিসংঘে পরমাণু চুক্তির পক্ষগুলোর একটি মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকের ইঙ্গিত দেন। তিনি বলেন, এই আলোচনা পুনরায় শুরু করার জন্য চলতি সপ্তাহটি গুরুত্বপূর্ণ।

আলোচনার জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ করে ইরানকে যত দ্রুত সম্ভব প্রত্যাবর্তন করতে হবে। তবে জাতিসংঘের ইরান মিশন তাৎক্ষণিকভাবে কোনো সাড়া দেয়নি।