কলকাতা-চেন্নাইয়ের ম্যাচ এমনই

কলকাতা নাইট রাইডার্স বনাম চেন্নাই সুপার কিংস। দুই জায়ান্টের লড়াইটা হয় সেয়ানে সেয়ানে। এবারো ব্যতিক্রম হলো না। আজ আবুধাবি ক্রিকেট স্টেডিয়ামে থ্রিলার উপহার দিয়েছে দল দুটি। শেষ পর্যন্ত শেষ বলের নাটকে স্নায়ুক্ষয়ী জয় তুলে নেয় চেন্নাই সুপার কিংস। আইপিএলে এ নিয়ে তৃতীয়বার শেষ বলে কলকাতাকে হারাল চেন্নাই।

ম্যাচটা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত উত্তেজনার রেণু ছড়িয়েছে। দ্বিতীয় ইনিংসে তো ম্যাচ দুলেছে পেন্ডুলামের মতো। শেষের নাটকে ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণ করে দিয়েছে রবিন্দ্র জাদেজার অতিমানবীয় আট বলে ২২ রানের বিস্ফোরক ইনিংস। ১৯তম ওভারে প্রসিদ কৃষ্ণাকে দুটি করে চার-ছক্কা মারেন রবিন্দ্র জাদেজা। ম্যাচ তখন চেন্নাইর হাতের মুঠোয়।

শেষ ওভারে চার রান দরকার মহেন্দ্র সিং ধোনিদের। কিন্তু ম্যাচটা হারার আগে হারল না কলকাতা নাইট রাইডার্স। দাঁতে দাঁত চেপে লড়াই করল কলকাতার ফ্র্যাঞ্চাইজিটি। শেষ ওভারে ভেলকি দেখান ক্যারিবীয় স্পিনার সুনিল নারাইন। প্রথম বলেই উইকেটে আঘাত হানেন। ধাক্কা সামলে নেয় চেন্নাই। তিন বলে এক রানের সহজ সমীকরণ ছিল চেন্নাইর সামনে।

কিন্তু চতুর্থ বলে ডট দেন নারাইন। পঞ্চম বলে ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা জাজেদা আউট! শেষ বল মিড উইকেটে পাঠিয়ে কোনোরকম রান নেন দ্বীপক চাহার। শেষ হয় নখ কামড়ানো উত্তেজনা। কলকাতার ১৭১ রানের চ্যালেঞ্জ চেন্নাই জয় করেছে দুই উইকেট হাতে রেখে। চলমান আইপিএলে এটা অষ্টম জয় ধোনিদের। ১০ ম্যাচে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে তারা। চেন্নাইয়ের সমান ম্যাচ ও পয়েন্ট থাকলেও রানরেটে পিছিয়ে দুইয়ে আছে দিল্লি ক্যাপিটালস। অন্যদিকে ১০ ম্যাচের ছয়টিতে হারা চারে থাকা কলকাতার জন্য প্লে-অফ পর্বে ওঠা কঠিন হয়ে পড়ল।

আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ওভারে ছয় উইকেটে ১৭১ রান করে কলকাতা নাইট রাইডার্স। ৩৩ বলে সর্বোচ্চ ৪৫ রান করেন রাহুল ত্রিপাঠি। ২৭ বলে ৩৭ রানে অজেয় থাকেন নিতিশ রানা। শেষ দিকে ১১ বলে ২৬ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলেন ডিনেশ কার্তিক। এ ছাড়া আন্দ্রে রাসেল ১৫ বলে ২০, ভেঙ্কাটেস আইয়ার ১৫ বলে ১৮ রানে আউট হন।

চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে উড়ন্ত সূচনা করে চেন্নাই সুপার কিংস। দুই ওপেনার রুতুরাজ গায়কোয়াড় ও ফ্যাফ ডু প্লেসি ব্যাট করেন আগ্রাসী মেজাজে। ওভার প্রতি রান তুলেছেন ন'য়ের বেশি। উদ্বোধনী জুটিতে তারা যোগ করেন ৭৪ রান। জুটি ভাঙে গায়কোয়াড় ২৮ বলে ৪০ রানে আউট হলে। দলীয় শতক ছাড়ানোর পর ফেরেন ডু প্লেসি। ৩০ বলে ৩০ রান করেন তিনি।

চেন্নাইর দুই ওপেনারকে আউট করে ম্যাচে ফিরে আসে কলকাতা। নিয়মিত বিরতি দিয়ে উইকেট খোয়াতে থাকে চেন্নাই। একপ্রান্ত আগলে রেখে রান তুলতে থাকেন মঈন আলি। কিন্তু ২৮ বলে ৩২ রান তুলে আউট হয়ে যান ইংলিশ অলরাউন্ডার। আম্বাতি রায়ডু ও সুরেশ রায়না সাজঘরে ফিরেছেন উইকেটে থিতু হওয়ার পর। দুজনই আউট হন দশকের ঘরে গিয়ে। চেন্নাই যখন কোণঠাসা তখন ত্রাণকর্তারূপে হাজির হন জাদেজা। শুরু করেন ঝড়। তাতে এলোমেলো কলকাতার জয়ের স্বপ্ন।