অচল ব্রিটেন, সেনা তলবের চিন্তা

ট্রাকচালকের ঘাটতিতে ব্রিটেনজুড়ে জ্বালানি সংকট দেখা দিয়েছে। ব্রিটেনের পেট্রোল পাম্পগুলোতে তেল নেই। দেশটির জনগণও প্রয়োজনের চেয়ে অতিরিক্ত তেল সংগ্রহে রাখার চেষ্টা করছেন। ফলে সংকট আরো ঘণীভূত হয়েছে। প্রতিটি পাম্পে লাইন ধরে আছে শত শত গাড়ি। তাদের তেল পাওয়ার আশা একেবারেই ক্ষীণ। এমতাবস্থায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সেনা তলবের চিন্তা করছে বরিস জনসনের সরকার। আল জাজিরা ও বিবিসির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়।

অনেক পেট্রোল পাম্পে ছিল গাড়ির দীর্ঘ লাইন

জানা যাচ্ছে, ব্রিটেনের ৯০ ভাগ পেট্রোল পাম্পে এখন কোনো তেল নেই। এরই মধ্যে দেশটির বড় শহরগুলোর অধিকাংশ পেট্রোল স্টেশন বন্ধ হয়ে গেছে। কবে নাগাদ সরবরাহ স্বাভাবিক হবে সে জবাব নেই কারো কাছে।

ব্রিটেনে ভারি ট্রাক চালকের সংকটের কথা শোনা যাচ্ছিল বেশ আগে থেকেই। ব্রেক্সিটের কারণে ইউরোপের অন্য দেশের চালকরা চলে গেছেন দেশটি ছেড়ে। করোনায় গাড়ি চালাতে না পেরে অনেকে পেশা পরিবর্তন করেছেন।

পেট্রোল পাম্পে তেল না থাকায় বন্ধের নোটিশ দেয় কর্তৃপক্ষ

এই মুহূর্তে দেশটিতে এক লাখের মতো ট্রাক চালক দরকার। এ সংকট আরো আগেই দেখা দিত। কিন্তু করোনার কারণে দীর্ঘদিন পরিবহণ বন্ধ থাকায় তা সেভাবে চোখে পড়েনি।

ব্রিটেনের ব্যবসায়ীরা বলছেন, ট্রাক চালকের সংকটের কারণে সব ধরনের পণ্য সরবরাহেই সমস্যা হচ্ছে। সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে জ্বালানি তেল সরবরাহের ক্ষেত্রে। অচিরেই এ সংকট সমাধানে কোনো ব্যবস্থা নেয়া না হলে পুরো দেশ অচল হয়ে যেতে পারে।

ব্রিটিশ গণমাধ্যমগুলো জানাচ্ছে, দেশটিতে জ্বালানি তেলের কোনো সংকট নেই, যথেষ্ট পরিমাণে মজুদ আছে। সমস্যা সরবরাহ নিয়ে। সংকট টের পেয়ে মানুষজন অতিরিক্ত তেল কিনে মজুদ করতে থাকে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে এ ধরনের কাজ থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানালেও কাজ হয়নি। বরং আতঙ্ক আরো বাড়ে। গাড়ির ট্যাংকির পাশাপাশি জেরিক্যানে করেও তেল সংগ্রহ করা হয়। ফলে দ্রুতই খালি হয়ে যায় পেট্রোল পাম্পগুলো।

সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলো বলছে, ট্রাক চালকের সংস্থান হলেই এ সমস্যা কমতে শুরু করবে। তবে কবে নাগাদ এটি হবে, তা জানাতে পারেনি কেউ।

ব্রিটিশ পেট্রোলিয়াম জানিয়েছে, এ অবস্থায় সরকার প্রতিযোগিতার আইন স্থগিত করতে বাধ্য হয়েছে এবং ঘাটতি কমাতে কোম্পানিগুলোকে একসাথে কাজ করার অনুমতি দিয়েছে।

এদিকে জানা গেছে, বরিস জনসনের কনজারভেটিভ সরকার দ্রুত চলমান সংকট কমাতে ৫ হাজার বিদেশি ট্রাক চালকদের অস্থায়ী ভিসা দেওয়ার পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে। তবে ব্যবসায়ী নেতারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, এটি একটি স্বল্পমেয়াদি সমাধান এবং এর মাধ্যমে স্থায়ী সমাধান হবে না।