দুবাইতে শাহরুখ ঝড়, জিতল প্রীতির পাঞ্জাব

শিরোনাম দেখেই চমকে যাওয়ার কথা। শাহরুখ খান নিজেই তো কলকাতা নাইট রাইডার্সের মালিক। সেখানে তিনি আবার কীভাবে প্রীতি জিনতার দলকে জেতালেন? কীভাবে হারালেন নিজের দল কলকাতাকেই? বিভ্রান্তির কারণ দুই শব্দের নাম। কলকাতার মালিক এবং পাঞ্জাব কিংস ব্যাটসম্যান- দুজনেরই নাম শাহরুখ খান!

শাহরুখের শেষের ঝড়েই শুক্রবার রাতে কলকাতাকে পাঁচ উইকেটে হারিয়েছে পাঞ্জাব। আগে ব্যাট করতে নেমে সাত উইকেটে ১৬৫ রানের চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহ তোলে কলকাতা। জবাব দিতে নেমে দুই ওপেনার লোকেশ রাহুল ও মায়াঙ্ক আগারওয়ালের এনে দেওয়া ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে ঝড় তোলেন শাহরুখ। পাঞ্জাব জেতে তিন বল হাতে রেখেই।

এই জয়ে প্লে-অফ পর্বের আশা বাঁচিয়ে রাখল পাঞ্জাব। কলকাতারও আশা বেঁচে আছে। তবে দুই দলেরই বাদ পড়ার আশঙ্কা আছে। কারণ তাদের সমান ১০ পয়েন্ট থাকলেও এক ম্যাচ কম খেলে তালিকার ছয়ে আছে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স। কলকাতা চারে এবং পাঞ্জাব পাঁচে। ১১ ম্যাচে ১৪ পয়েন্ট তিনে থাকা রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর। ১৮ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে চেন্নাই সুপার কিংস। দুই পয়েন্ট কম নিয়ে দুইয়ে দিল্লি ক্যাপিটালস।

শীর্ষ তিন দলই একটি করে ম্যাচ কম খেলেছে। তাই প্লে-অফের চতুর্থ টিকিট নিয়েই যতো বিপত্তির আশঙ্কা। কলকাতা, পাঞ্জাব এবং মুম্বাই আছে চতুর্থ হওয়ার লড়াইয়ে। ১১ ম্যাচে আট পয়েন্ট নিয়ে ছয় নম্বরে থাকা রাজস্থান রয়্যালেরও ক্ষীণ সম্ভাবনা আছে। অতি নাটকীয় কিছু হলে তবেই প্লে-অফ পর্বে উঠতে পারবে মুস্তাফিজুর রহমানের রাজস্থান।

রবিন লিগ রাউন্ডের শেষের এই লড়াইটা জমিয়ে তুলেছে কলকাতা এবং পাঞ্জাব। কাল রাতে দুবাইতে তাদের লড়াইটাও হয়েছে প্রত্যাশিত। এই লড়াইয়ে টপ অর্ডারের দৃঢ়তায় ‌চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহ তুলে নেয় কলকাতা। ৪৯ বলে সর্বোচ্চ ৬৭ রান করেন ওপেনার ভেঙ্কাটেশ আইয়ার। রাহুল ত্রিপাঠি ৩৬ রান করেন ২৬ বলে। ১৮ বলে ৩১ রানের ঝড় তোলেন নিতিশ রানা। দিনেশ কার্তিক ১১ বলে ১১ রান করেন।

যথারীতি এদিনও ব্যর্থ কলকাতা অধিনায়ক ইয়ন মরগান। দুই বলে দুই রানে আউট হন তিন। কেবল অধিনায়ক কোটাতেই ম্যাচের পর ম্যাচ খেলে যাচ্ছেন ইংলিশ ব্যাটসম্যান। অথচ বেঞ্চে বসে থাকতে হচ্ছে বাংলাদেশি অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানকে। চলমান আইপিএলের দ্বিতীয় পর্বটায় পানি টানতে টানতেই ক্লান্ত হয়ে পড়ছেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। সাকিবের জায়গায় যিনি খেলেছেন সেই সুনিল নারাইন ৩৪ রানে নিয়েছেন এক উইকেট। তিন বলে তিন রানে থাকেন অজেয়।

যথারীতি সাকিবকে ছাড়া খেলতে নেমে এদিনও হারল কলকাতা। ব্যাটিংটা মোটামুটি হলেও বোলিংয়ে নাজুক অবস্থা তাদের। এর পুরো ফায়দা নিয়েছেন পাঞ্জাব কিংসের দুই ওপেনার। উদ্বোধনী জুটিতে ৭০ রান যোগ করেন রাহুল ও মায়াঙ্ক আগারওয়াল। যা কঠিন লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছানোর কাজটা সহজ করে দেয়। ৫৫ বলে ৬৭ রান করেন পাঞ্জাব অধিনায়ক রাহুল।

২৭ বলে ৪০ রানের ঝড় ওঠে আগারওয়ালের ব্যাটে। এই দুজনের বিদায়ের পর ম্যাচটা কঠিন হয়ে যায় পাঞ্জাবের জন্য। কমে আসে রানের গতি। অল্পতেই বিদায় নেন নিকোলাস পুরান ও এইডেন মার্করাম। প্রথমজন ১২ এবং দ্বিতীয়জন ১৮ রানে আউট হন। শেষ দিকে আস্কিং রেটের চাপে পড়ে পাঞ্জাব। সেই চাপ উড়ে গেছে শাহরুখের নয় বলে ২২ রানের ক্যামিও ইনিংসের সুবাদে। তবে শাহরুখ জয়ের শেষের নায়ক হলেও ম্যাচ সেরা হয়েছেন অধিনায়ক রাহুল।