ওদের একজন আসিফ আছে

চলতি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ফেভারিটের তালিকায় ছিল না পাকিস্তান। কিন্তু যতই দিন যাচ্ছে, দেশটি নিজদের সামর্থ্যের জানান দিচ্ছে। তাদের আছে শাহিন শাহ আফ্রিদির নেতৃত্বে বোলিং ইউনিট, বাবর-রিজওয়ানদের নেতৃত্বে ব্যাটিং অর্ডার, হাফিজ-মালিক জুটির অভিভাবক ফোরাম, আর আছেন একজন আসিফ আলি। টানা তিন ম্যাচ জিতে সেমিফাইনাল অনেকটাই নিশ্চিত করে ফেলেছে বাবর আজমের দল।

আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ জেতার পর সঙ্গী সাদাবের সাথে আসিফের কোলাকুলি

বিশ্বকাপে তাদের প্রথম ম্যাচটি ছিল বড় পরীক্ষার, ভারতের বিপক্ষে। সে ম্যাচে বাবর আজম ও রিজওয়ানের ব্যাটিং দেখে মনে হয়েছে, তারা দুইজনই ভালো হোমওয়ার্ক করে এসেছেন। ফলে ব্যাট হাতে অন্যদের পরীক্ষায় যেতে হয়নি। ভারত হারে ১০ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে। টপ অর্ডার ব্যর্থ হলেও যে টেনশনের কিছু নেই তাও গেলো গত দুই ম্যাচে। কারণ তাদের একজন আসিফ আলি আছেন।

নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ম্যাচে ১৩৫ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে এক পর্যায়ে বিপদেই পড়ে যায় পাকিস্তান। নিউজিল্যান্ডের বোলাররা তাদের চেপে ধরেছিল। ১৫তম ওভারের শেষ বলে নেমে চিত্রটা পুরোপুরি পাল্টে দেন আসিফ আলি। ১৭তম ওভারে টানা দুই ছক্কায় ম্যাচের মোড় ঘুরে যায় পাকিস্তানের দিকে। তাকে দেখে সাহসী হয়ে ওঠেন শোয়েব মালিকও। পরের ওভারে চার, ডাবলস, ছক্কায় তিন বলে মালিকের সংগ্রহ ১২ রান।

আসিফ ইন অ্যাকশন

১৯তম ওভারে এসে আসিফ বোল্টের বলটি উড়িয়ে পাঠান সীমানার বাহিরে। চতুর্থ বলে ডাবলস নিয়ে খেলা শেষ। ১২ বলে এক চার ও তিন ছক্কায় ২৭ রান করে বিজয়ীর বেশে মাঠ ছাড়েন আসিফ।

গতকাল তো আরেক দফা বেশি। ‘ছোট ভাই’ আফগানিস্তানের কাছেই হেরে যেতে হয় কি না পাকিস্তান শিবির তখন সেই টেনশনে কাঁপছিল। ১৭ ওভারের শেষ বলে বাবর আজম আউট হলে ব্যাটিংয়ে নামেন আসিফ। ১৮ ওভারের শেষ বলে এক রান নেয়ার সুযোগ ছিল সঙ্গী সাদাবের হাতে। কিন্তু আসিফের মধ্যে তা নেয়ার কোনো আগ্রহই দেখা যায়নি। ধারাভাষ্যকাররা পর্যন্ত হতবাক হয়েছেন। সে মুহূর্তে বিষয়টি তাদের কাছে বিলাসিতা বলেই মনে হয়েছিল।

১৮ ওভার শেষে পাকিস্তানের প্রয়োজন দাঁড়ায় ১২ বলে ২৪ রান। বোলার তখন করিম জিনাত। আগে তিন ওভারে তিনি দিয়েছেন ২৪ রান। তাকেই টার্গেট বানান আসিফ। প্রথম বলে ছক্কা, দ্বিতীয় বল ডট, তৃতীয় বলে ছক্কা, চতুর্থ বলে ডট, পঞ্চম বলে ছক্কা এবং ষষ্ঠ বলেও ছক্কা। খেলা শেষ। এক ওভার বাকি থাকতেই জয়ী আসিফ অ্যান্ড কোং প্যাভিলিয়নের পথে। ধারাভাষ্যকাররা স্বীকার করে নেন, আগের ওভারের শেষ বলে আসিফের ওই সিঙ্গেল না নেওয়াটাই ভালো হয়েছে।

নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে পাকিস্তান জয় পেয়েছিল ৫ উইকেটে। আফগানিস্তানের বিপক্ষেও তাই। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, প্রত্যেক দলই এখন একজন আসিফ আলিকে দলে চাইবে।