‘মৃত ঘোষিত’ তালেবানের সর্বোচ্চ নেতা জনসমক্ষে

আফগানিস্তান ইসলামিক আমিরাত (আইইএ) সরকারের সর্বোচ্চ নেতা মোল্লা হাইবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের জবাবদিহিতা বজায় রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। পাশাপাশি কোরআন ও শরীয়া অননুমোদিত বিষয়গুলো এড়িয়ে চলার আহ্বান জানিয়েছেন। গত শনিবার কান্দাহারের একটি মাদ্রাসা পরিদর্শনকালে তিনি এসব কথা বলেন।

মোল্লা হাইবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা

আফগানিস্তানে তালেবান সরকার প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর সর্বোচ্চ নেতা বা আমিরুল মুমিনীন হিসেবে হাইবাতুল্লাহ আখুন্দজাদার নাম ঘোষণা করা হয়। সেপ্টেম্বরের শুরুতে ঘোষিত এই সরকারের অনেক সদস্যকে বিভিন্ন সময়ে দেখা গেলেও হাইবাতুল্লাহকে কোনো অনুষ্ঠানেই দেখা যায়নি। ফলে তার দায়িত্ব পালন নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। এমনকি এক পর্যায়ে তার বেঁচে থাকার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়।

শীর্ষ এক তালেবান নেতার উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়, গত বছরই পাকিস্তানী সেনাদের একটি আত্মঘাতী হামলায় তিনি নিহত হয়েছেন। এমন খবর প্রকাশের পরও তালেবানের পক্ষ থেকে এর সত্যতা সম্পর্কে কোনো কথা বলা হয়নি।

দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের জবাবদিহিতা বজায় রাখার নির্দেশ দিয়েছেন আখুন্দজাদা

এর মধ্যেই গত শনিবার তিনি কান্দাহারের জামিয়া দারুল আলুম হাকিমিয়া নামক একটি মাদরাসায় উপস্থিত হন। তিনি প্রতিষ্ঠানটি ঘুরে দেখেন এবং সার্বিক বিষয়ে খোঁজ নেন। এ সময় তার সাথে তালেবানের অন্য শীর্ষ নেতারাও উপস্থিত ছিলেন। হাইবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা সেখানে বক্তৃতা দেন।

তার বক্তব্যে রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা ছিল না। তিনি সবাইকে শরীয়ত মোতাবেক দায়িত্ব পালনে সতর্ক করে দেন। পরে তিনি ইসলামিক আমিরাত এবং সদ্য প্রতিষ্ঠিত তালেবান সরকারের সাফল্যের জন্য দোয়া করেন। নেতৃত্বের জন্য আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে আহত যোদ্ধাদের সুস্থতার জন্য দোয়া করেন।

তার এ কর্মসূচির কোনো ভিডিও প্রকাশ পায়নি। কয়েকটি ভিন্ন ভিন্ন ক্লিপে ভাষণের কিছু অডিও পাওয়া গেলেও পুরো বক্তৃতা ধারণ করা যায়নি বলে মনে করা হচ্ছে। ভাষণে হাইবাতুল্লাহ তার অনুসারী এবং তালেবানের জন্য আরো কিছু নির্দেশনা প্রদান করেন।

আখুন্দজাদাকে নিয়ে এমন ধাঁধাঁ অবশ্য আজকের নয়। ২০১৬ সালের পর থেকে কখনোই তাকে জনসমক্ষে দেখা যায়নি। ফলে তখন থেকেই তার বেঁচে থাকা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছিল। এর আগে নব্বইয়ের দশকে তালেবানের ক্ষমতার সময় হাইবাতুল্লাহকে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেয়া হয়। তার ওপর ভার পড়েছিল অপরাধ দমনের।

২০০১ সালে টুইন টাওয়ারে হামলার পর আমেরিকা যখন কাবুল থেকে তালেবানকে উচ্ছেদ করে, তখন আখুন্দজাদাকে তালেবান পরিষদের প্রধান করা হয়। ২০১৫ সালে তালেবান প্রধান মোল্লা আখতার মনসুর তার সহকারী হিসেবে নিযুক্ত করেন হাইবাতুল্লাহকে। ২০১৬ সালে মার্কিন ড্রোন হামলায় মনসুর নিহত হওয়ার পর তালেবানের নেতৃত্ব পান হাইবাতুল্লাহ।