নাগাল্যান্ডে উত্তেজনা চরমে, ন্যায়বিচার দাবি মমতার

ভারতের নাগাল্যান্ডে নিরাপত্তাবাহিনীর ভুল অভিযানে নিহত হয়েছেন অন্তত ১৩ গ্রামবাসী। গত শনিবারের এই অভিযান সম্পর্কে নিরাপত্তাবাহিনী জানিয়েছে, সন্ত্রাসবাদী ভেবে ‘ভুল করে’ চালানো গুলিতে তারা মারা গেছেন। গতকাল রোববার সেখানে একই পদ্ধতিতে আরো একজন মারা যাওয়ার ঘটনায় ফের উত্তেজনা দেখা দেয়। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি এই ঘটনায় ন্যায়বিচার দাবি করেছেন।

নাগাল্যান্ডে পুড়ছে ক্যাম্প

শনিবার মিয়ানমার সীমান্তে অবস্থিত নাগাল্যান্ডের মন জেলার ওটিং গ্রামে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান চালায় নিরাপত্তাবাহিনী। তাদের চালানো গুলিতে মারা যান ১৩ গ্রামবাসী এবং এক জওয়ান। ঘটনার পর রাজ্যজুড়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। রোববার আরও একজন গ্রামবাসী প্রাণ হারিয়েছেন। পুলিশ বলছে, নিরাপত্তারক্ষীদের ঘাঁটি জ্বালিয়ে দেয়ার পরিকল্পনা ছিল বিক্ষোভকারীদের। সেটা প্রতিরোধ করতে গিয়েই একজন মারা গেছেন। সব মিলিয়ে এই ঘটনায় ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।

নতুন করে যাতে উত্তেজনা ছড়াতে না পারে, সে কারণে মন জেলাজুড়ে ইন্টারনেট ও এসএমএস পরিষেবা বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন। তারা জানিয়েছে, হোয়াটসঅ্যাপ, ফেসবুকের মাধ্যমে যাতে ভুয়া খবর বা ছবি ছড়াতে না পারে সে কারণেই এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

নাগাল্যান্ডে বেড়েছে নিরাপত্তাবাহিনীর টহল

অন্যদিকে আসাম রাইফেলসের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এ ঘটনায় আমরা ‘গভীরভাবে অনুতপ্ত’। গোয়েন্দা সূত্রে খবর পেয়েই সন্ত্রাসবাদীদের ধরতে ওটিং গ্রামে অভিযান চালানো হয়। এ ঘটনায় নাগাল্যান্ডের মুখ্যমন্ত্রী নেইফিউ রিওর নির্দেশে উচ্চ পর্যায়ের একটি তদন্তকারী দল গঠন করা হয়েছে।

মুখ্যমন্ত্রী টুইটারে দুঃখপ্রকাশ করেছেন। একে ‘দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা’ বলে উল্লেখ করে নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন তিনি।

এই ঘটনায় শোকপ্রকাশ করে ন্যায়বিচার দাবি করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। টুইটে তিনি লেখেন, নাগাল্যান্ড থেকে উদ্বেগজনক খবর পাওয়া যাচ্ছে। মৃতদের পরিবারকে জানাই সমবেদনা। সেই সঙ্গে যারা আহত হয়েছেন তাদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করি। আমাদের এটা নিশ্চিত করতে হবে যেন, এই ঘটনায় বিস্তারিত তদন্ত হয় এবং সমস্ত আক্রান্তরা ন্যায়বিচার পান।

নাগাল্যান্ড, মণিপুর, অরুণাচল প্রদেশ, মিজোরাম, আসাম ও মায়ানমারের বিস্তীর্ণ অঞ্চল নিয়ে নাগা স্বাধীনভূমি বা ‘নাগালিম’ গড়ার ডাক বহুদিনের। এই দাবিতে অনেক দিন ধরেই স্বাধীনতা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে এনএসসিএন। সংগঠনটি দুই ভাগ হয়ে যাওয়ার পর মুইভা গোষ্ঠীর সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছে কেন্দ্র। কিন্তু অপর অংশটি এখনও আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। সেই আন্দোলন দমন করতেই তল্লাশি চালাচ্ছিল নিরাপত্তারক্ষীরা।