মৃত্যুর আগে এক ফোঁটা পানিও পাননি সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের নায়ক!

ভারতের দুই প্রতিবেশী দেশে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক চালিয়েছিলেন তিনি। ২০১৬ সালে পাকিস্তানে সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের পরিকল্পনার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তার আগের বছর মিয়ানমারে চালানো সার্জিক্যাল স্ট্রাইকেও তার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। দুই দুটি দেশে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক চালানো ভারতের প্রথম সর্বাধিনায়ক বিপিন রাওয়াত গত বুধবার এক হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় মারা গেছেন। প্রত্যক্ষদর্শী এক ব্যক্তি জানিয়েছেন, মারা যাওয়ার আগে সামান্য পানি চেয়ে পাননি ভারতের শীর্ষ এই সামরিক কর্মকর্তা।

দুর্ঘটনাস্থল ও বিপিন রাওয়াত

প্রত্যক্ষদর্শী শিবকুমার নামের এক যুবক বলেন, স্থানীয় চা বাগানে কাজ করা বড় ভাইয়ের সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছিলেন তিনি। হঠাৎ দাউ দাউ করে জ্বলতে থাকা আগুন দেখতে পেয়ে সেদিকে ছুটে যান। এক জায়গায় দেখেন, তিনটি আধপোড়া দেহ পড়ে রয়েছে। তিনজনের মধ্যে একজন তখনও জীবিত। অস্ফুট স্বরে পানি চাইছেন।

শিবকুমার দিশেহারা হয়ে পড়েন। সে মুহূর্তে তার কাছে কোনো পানি ছিল না। ফলে তাকে পানি দেয়া সম্ভব হয়নি। সে সময় তার সঙ্গে অন্য যারা ছিলেন সবাই মিলে ধরাধরি করে একটি চাদরের ওপর রাখলেন মানুষটিকে। পরে উদ্ধারকারী দল এসে নিয়ে যায় তাকে। এ ঘটনার সময় শিবকুমার জানতেন না ওই ব্যক্তি দেশের প্রথম সেনা সর্বাধিনায়ক বিপিন রাওয়াত।

পাকিস্তানে আরো সার্জিক্যাল স্ট্রাইক প্রয়োজন বলে মনে করতেন বিপিন রাওয়াত

তিন ঘণ্টা পর এক উদ্ধারকর্মী বিপিন রাওয়াতের নাম জানালে আক্ষেপে পুড়তে থাকেন শিবকুমার। তিনি সংবাদমাধ্যমে বলেন, আমি বিশ্বাসই করতে পারছি না, যে মানুষটা দেশের জন্য এত করলেন তিনি শেষ বেলায় এক ফোঁটা পানিও পেলেন না। ভেবে সারা রাত ঘুমুতে পারিনি।’

গত বুধবার বেলা ১২টা ৪০ নাগাদ কুন্নুরে একটি চা বাগানে ভেঙে পড়ে এমআই-১৭ হেলিকপ্টার। কপ্টারটি ভেঙে পড়ার পর তাতে আগুন ধরে যায়। দুর্ঘটনায় ১৪ জন সওয়ারির মধ্যে ১৩ জনের মৃত্যু হয়। হাসপাতালে মারা যান সেনা সর্বাধিনায়ক। অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যান তার স্ত্রী মধুলিকা।

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর নিহত ১৯ ভারতীয় জওয়ানের রক্তের বদলা নিতে পাকিস্তানে সার্জিক্যাাল স্ট্রাইক চালানো হয়। এর আগের বছর মণিপুরের চান্দেল এলাকায় ১৮ ভারতীয় জওয়ানকে হত্যার বদলা নিতে মিয়ানমারে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক চালানো হয়েছিল। উভয় অভিযানে যুক্ত ছিলেন বিপিন রাওয়াত।