বাংলাদেশসহ চার দেশের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নিষেধাজ্ঞা

চীন, মায়ানমার, উত্তর কোরিয়া এবং বাংলাদেশের ওপর গতকাল শুক্রবার নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশগুলোর সাথে যুক্ত কয়েক ডজন মানুষ এবং সংস্থার ওপর ব্যাপক মানবাধিকার লংঘনের অভিযোগে এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। দেশগুলোর পক্ষ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য আসেনি। ইরানিয়ান লেবার নিউজ।

হোয়াইট হাউস

খবরে বলা হচ্ছে, বাংলাদেশে র‌্যাবের সাত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ এনেছে যুক্তরাষ্ট্র। কর্মকর্তাদের মধ্যে রয়েছেন র‌্যাবের সাবেক মহাপরিচালক ও বর্তমান আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ। এর পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত রবার্ট মিলারকে তলব করেছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

মিয়ানমারে মানবাধিকার লঙ্ঘন সম্পর্কিত নিষেধাজ্ঞায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে যুক্ত হয়েছে কানাডা এবং যুক্তরাজ্য। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসনের অধীনে উত্তর কোরিয়ার ওপর প্রথম এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হল। মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে মিয়ানমারের সামরিক সংস্থাগুলোকেও নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ডেপুটি ট্রেজারি সেক্রেটারি ওয়ালি আদেয়েমো একটি বার্তায় বলেছেন, এই পদক্ষেপ বিশেষ করে যুক্তরাজ্য এবং কানাডার সাথে অংশীদারিত্বে করা হয়েছে। এটি বার্তা দেয় যে, সারা বিশ্বের গণতান্ত্রিক শক্তি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে যারা রাষ্ট্রের ক্ষমতার অপব্যবহার করে দুর্ভোগ ও নিপীড়ন চালাচ্ছে।

বাইডেনের দুই দিনের ভার্চুয়াল সামিট ফর ডেমোক্রেসিতে তিনি বিশ্বজুড়ে গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করার উদ্যোগ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গণতন্ত্রের পক্ষে আইন করার ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, এই সম্মেলনে একশর বেশি দেশ বেশ কিছু বিশ্বনেতার ক্রমবর্ধমান স্বৈরাচারী মনোভাব দমন করবে এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করবে। এটি বিশ্বজুড়ে গণতন্ত্র প্রস্ফুটিত হওয়ার জন্য উর্বর ভূমিতে বীজ বপন করতে সহায়তা করবে।

চীনা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সংস্থা সেন্সটাইমকেও কালো তালিকায় যুক্ত করেছে যুক্তরাষ্ট্র । এ কোম্পানির বিরুদ্ধে অভিযোগ, এটি এমন একটি প্রোগ্রাম তৈরি করেছে যা জাতিগতভাবে উইঘুরদের শনাক্তকরণের ওপর বিশেষ ফোকাস করে। প্রোগ্রামটি নির্দিষ্ট জাতিসত্তা নির্ধারণ করতে পারে, বিশেষ করে উইঘুরদের।

খবর বলছে, জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞ এবং মানবাধিকার সংস্থাগুলো মনে করে, জিনজিয়াংয়ে একটি বিশাল ব্যবস্থায় এক মিলিয়নেরও বেশি লোক উইঘুর মুসলিম সংখ্যালঘুদের কারারুদ্ধ করা হয়েছে। সেখানে গণহত্যা চালাচ্ছে চীন।

মিয়ানমারের দুটি সামরিক সংস্থা এবং অপর একটি সংস্থার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। বলা হচ্ছে, প্রতিরক্ষা শিল্প অধিদপ্তর সেনাবাহিনী এবং পুলিশের জন্য অস্ত্র তৈরি করে, যা সেনাবাহিনী ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থান বিরোধীদের উপর নৃশংস ক্র্যাকডাউনে ব্যবহার করেছিল।

অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনারস (এএপিপি) নামক মনিটরিং গ্রুপের মতে, মিয়ানমার সামরিক জান্তা বিরোধীদের দমন করতে ১ হাজার ৩০০ জনেরও বেশি লোককে হত্যা করেছে।

উত্তর কোরিয়ার সেন্ট্রাল পাবলিক প্রসিকিউটর অফিসকেও কালো তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। বলা হচ্ছে, উত্তর কোরিয়া দীর্ঘদিন ধরে তার পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচীর ওপর আরোপিত মার্কিন এবং আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করেই চলেছে।