ভোটব্যাংকের সমীকরণে নিরাপত্তা পায় না ভারতের সংখ্যালঘুরা!

ভারতের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের অভিযোগ, সরকার সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা বন্ধ করতে ব্যর্থ হয়েছে। মূলত ভোটব্যাংকের সমীকরণের ফলে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন সংখ্যালঘুরা। গত শনিবার পালিত হওয়া সংখ্যালঘু অধিকার দিবসে নেতারা দাবি জানান, সংখ্যালঘুদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করতে পদক্ষেপ নিতে হবে। আনাদোলুর এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা যায়।

দিল্লির গ্র্যান্ড মসজিদে জুমার নামাজ আদােয়ের দৃশ্য

সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নেতারা দাবি করেন, ২০১১ সালে অনুষ্ঠিত সর্বশেষ আদমশুমারি অনুসারে ভারতে সংখ্যালঘুদের সংখ্যা মোট জনসংখ্যার প্রায় ১৯ দশমিক তিন শতাংশ। কিন্তু তারপরও সাম্প্রতিক সময়ে ভারতে সংখ্যালঘুদের, বিশেষকরে মুসলমানদের বিরুদ্ধে আক্রমণ বেড়েছে।

ভারতের বৃহত্তম সামাজিক-ধর্মীয় মুসলিম সংগঠন জমিয়ত উলামা-ই-হিন্দের সেক্রেটারি নিয়াজ ফারুকি বলেন, অনেক শক্তি আছে যারা সংখ্যালঘুবিরোধী এবং এখন বিশেষকরে ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা হুমকির সম্মুখীন। সংগঠন ও ব্যক্তিদের হিন্দুত্ববাদী গোষ্ঠীর দ্বারা হুমকি দেওয়া হচ্ছে। সমস্যা হচ্ছে, এ ধরনের বিষয়কে এখন আর অপরাধ মনে করা হচ্ছে না বরং এটিই আদর্শ হয়ে উঠেছে।

সংখ্যালঘুদের অধিকার সংরক্ষণের র‌্যালি

ফেডারেশন অল ইন্ডিয়া ক্যাথলিক ইউনিয়নের ভাইস প্রেসিডেন্ট ইলিয়াস ওয়াজ বলেছেন, ‘ভারত একটি বৈচিত্র্যময় দেশ। এদেশে প্রত্যেকেরই নিজস্ব সংস্কৃতি রয়েছে। কিন্তু কিছু লোক ক্ষমতার স্বার্থপরতার কারণে ভারতের সেই বৈচিত্র্যকে ধ্বংস করার চেষ্টা করছে। আর সরকারও সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছে।’

গত অক্টোবরে এ বিষয়ক একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি বছরের শুরু থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত খ্রিস্টান সম্প্রদায়কে লক্ষ্য করে সহিংসতার তিন শতাধিক ঘটনা রিপোর্ট করা হয়েছে।

শিখকেন্দ্রিক রাজনৈতিক দল ডালের একজন সিনিয়র নেতা প্রেম সিং চান্দুমাজরা বলেন, কয়েক বছর ধরে সংখ্যালঘুদের মধ্যে ভয় বেড়েছে। তারা (সরকার) পদক্ষেপ নিচ্ছে না দৃশ্যত ভোটব্যাংকের কারণে। ভারত সরকারের উচিত সবাইকে সমানভাবে দেখা।

ক্ষমতাসীন বিজেপি অবশ্য এসব অভিযোগ প্রত্যাখ্যানের পাশাপাশি দাবি করে, তারা সকল নাগরিক ও সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষা করছে। সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রী শ্রী মুখতার আব্বাস নকভি বলছেন, দেশে সংখ্যালঘুরা পুরোপুরি নিরাপদ এবং তাদের সাথে কোনো নৃশংসতা করা হচ্ছে না। তারপরও আমরা সম্পত্তি বা চাকরিতে কিছু বৈষম্যের অভিযোগ পাচ্ছি, এগুলো সমাধানের চেষ্টা চলছে।

অন্যদিকে জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশনের চেয়ারম্যান ইকবাল সিং লালপুরা কিছু ঘটনা ধর্মের ভিত্তিতে ঘটে উল্লেখ করে বলেন, আমরা আন্তঃধর্ম সমন্বয় কমিটি গঠনের চেষ্টা করছি, যাতে বিষয়গুলো সমাধান করতে পারি।