আফগানিস্তানে সহায়তায় ঐক্যবদ্ধ মুসলিম বিশ্ব

আফগানিস্তানের জনগণের সহায়তা করতে মুসলিম বিশ্বের নেতারা গতকাল রোববার একমত হয়েছেন। পাকিস্তানের ইসলামাবাদে অর্গানাইজেশন অফ ইসলামিক কো-অপারেশনের (ওআইসি) বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন নেতারা। বৈঠকে বলা হয়, আফগানিস্তানের অর্থনৈতিক পতন এ অঞ্চল ও বিশ্বে ভয়াবহ প্রভাব ফেলবে। ওআইসি পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের শীর্ষ সম্মেলনের শুরুতে এ সতর্কতা দেন তারা।

আফগানিস্তান ইস্যুতে পাকিস্তানে ওআইসি সম্মেলন

ওআইসির সম্মেলনে অংশ নেয় চীন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং রাশিয়ার প্রতিনিধিরা। তারা আফগানিস্তানের বিশেষ প্রতিনিধিদের সাথেও বৈঠক করেছেন। সম্মেলনে জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল মার্টিন গ্রিফিথস ও ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট মুহাম্মদ সুলাইমান আল জাসের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন, যিনি বেশ কিছু সুনির্দিষ্ট অর্থায়নের প্রস্তাব দিয়েছেন।

তিনি বলেন, আইডিবি এমন ট্রাস্ট পরিচালনা করতে পারে, যা আফগানিস্তানে অর্থ স্থানান্তর করতে, ব্যবসা শুরু করতে এবং গভীরভাবে সংকটাপন্ন অর্থনীতিকে উদ্ধারে সাহায্য করতে পারে।

বক্তারা আফগানিস্তানের ব্যাংকিং ব্যবস্থা দ্রুত চালু করার এবং সম্মিলিতভাবে জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠানের সাথে আফগানিস্তানে সহায়তার আহ্বান জানান। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ওয়াশিংটনকে আফগানিস্তানের তহবিল ছাড়ের আহ্বান জানিয়েছেন।

ইমরান খান বলেন, মানবাধিকার এবং নারীর অধিকার বিভিন্ন দেশে ভিন্ন রকম। ওআইসি চেয়ারম্যান হুসেইন ইব্রাহিম ত্বহাসহ অন্যান্য বক্তারা মানবাধিকার, বিশেষ করে নারী ও মেয়েদের সুরক্ষার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেন সম্মেলনে।

নতুন তালেবান শাসকদের ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি পাকিস্তানের পার্লামেন্টের গ্র্যান্ড হলে উপস্থিত ছিলেন, যেখানে ওআইসির কয়েক ডজন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জড়ো হয়েছিলেন।

পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশি বলেছেন, অবিলম্বে সাহায্য ছাড়া আফগানিস্তানের পতন নিশ্চিত ও এর ভয়াবহ পরিণতি হবে। শুধ ক্ষুধা ও রোগের কারণে মৃত্যুর পাশাপাশি আফগানরা ব্যাপকভাবে দেশত্যাগ করবে। তিনি বলেন, আফগানিস্তানের মানুষ সহায়তা না পেলে বিশ্বে বিশৃঙ্খলা ছড়িয়ে পড়বে এবং সন্ত্রাসবাদ ও মাদক ব্যবসার বিকাশ ঘটবে।

জাতিসংঘের মার্টিন গ্রিফিথস সতর্ক করেন, আফগানিস্তান শুধু অনুদানে টিকে থাকবে না। তিনি দাতা দেশগুলো নমনীয়তা দেখানোর জন্য । তিনি অনুরোধ করেন, যাতে আফগানিস্তানের জনগণকে এই শীতের মধ্য দিয়ে যাওয়ার কিছু সুযোগ করে দেওয়া হয়।

জাতিসংঘ কর্মকর্তা গ্রিফিথস বলেন, আমরা একে অপরের কাছ থেকে কী আশা করি তা স্পষ্ট করার জন্য তালেবান সরকারের সাথে আমাদের গঠনমূলক সম্পৃক্ততা প্রয়োজন। আফগানিস্তানের ধসে যাওয়া অর্থনীতি উদ্ধারে নিষ্পত্তিমূলক ও সহানুভূতিশীল পদক্ষেপের প্রয়োজন।