আফগানিস্তানে সহায়তা পাঠাতে নিরাপত্তা পরিষদে ঐকমত্য

আফগানিস্তানে মানবিক ত্রাণ সহায়তা পাঠানোর ব্যাপারে সর্বসম্মতিক্রমে একটি প্রস্তাব পাস করেছে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ। যুক্তরাষ্ট্রের উত্থাপিত এই প্রস্তাবে নিরাপত্তা পরিষদের সব সদস্য সম্মতিসূচক ভোট দিয়েছে। ফলে, এখন থেকে আফগানিস্তানের পাওনা অর্থ পরিশোধ করা, অর্থনৈতিক সম্পদ এবং সময়মতো পণ্য পাঠানো ও প্রয়োজনীয় সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে আর কোনো বাধা থাকবে না।

জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ

প্রস্তাবে বলা হয়, এ ধরনের সহযোগিতা আফগানিস্তানের মৌলিক মানবিক চাহিদা পূরণে সহায়তা করবে এবং এর মাধ্যমে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কোনো লঙ্ঘন হবে না।

এর আগে যুক্তরাষ্ট্র জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে আরেকটি প্রস্তাব তুলেছিল। তাতে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের যে কমিটি আফগানিস্তানের ওপর নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি দেখাশোনা করে তারা অনুমোদন দিলে আফগানিস্তানে মানবিক ত্রাণ সহায়তা পাঠানো যাবে। চীন ও রাশিয়া ওই প্রস্তাবের ওপর ভেটো দিয়েছিল। তারপর যুক্তরাষ্ট্র সংশোধিত প্রস্তাব পেশ করে এবং গত বুধবার তা পাস হয়।

আফগানিস্তানের আর্থিক অবস্থা দিন দিন খারাপের দিকে যাচ্ছে

গত ১৫ আগস্ট কাবুল নিয়ন্ত্রণের মধ্য দিয়ে তালেবান পুরো আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেয়। এর দুই সপ্তাহ পরে তারা অন্তর্বর্তী একটি সরকার গঠন করে। এই সরকার গঠনের পর যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্ন ক্ষেত্রে আফগানিস্তানের রিজার্ভসহ প্রায় এক হাজার কোটি ডলার আটক করে এবং তালেবানের বহু কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। প্রায় চার মাস ধরে এ অবস্থা বিরাজ করতে থাকায় আফগানিস্তান মারাত্মক অর্থসংকটে পড়ে।

নিরাপত্তা পরিষদের এ প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়ে পাকিস্তান বলেছে, এখন আফগান অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করার একটি পথ খুঁজে পাওয়া উচিত এবং আফগান সম্পদগুলো ছেড়ে দেয়া উচিত। ইসলামাবাদ জানায়, প্রস্তাবটি গুরুত্বপূর্ণ সময়ে এসেছে এবং তাতে আফগান জনগণকে সাহায্য করার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জরুরি অনুভূতি প্রতিফলিত হয়েছে। গত কয়েক দশকের সংঘাতের কারণে তারা চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ইসলামাবাদের বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, পাকিস্তান আশা করে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, বিশেষ করে দাতা দেশ, জাতিসংঘ সংস্থা, মানবিক সংস্থা, আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং অন্যান্য জরুরি ত্রাণ প্রদানকারীরা আফগানিস্তানের জনগণকে সম্ভাব্য সব ধরনের সহায়তা প্রদানের জন্য দ্রুত ও দৃঢ় সংকল্পের সাথে কাজ করবে।

এর আগে ইসলামাবাদে অনুষ্ঠিত ওআইসি সম্মেলনে বলা হয়েছিল, আফগান অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করার জন্য আফগান জনগণের ন্যায্য সম্পত্তিগুলো তাদের হাতে ছেড়ে দেয়া উচিত।