বিক্ষোভকারীদের দেখামাত্র গুলির নির্দেশ, রাস্তায় রুশ সেনা

গণবিক্ষোভে অচল হয়ে পড়া কাজাখস্তানের রাস্তায় টহল দিচ্ছে রাশিয়ার সেনারা। সহিংস বিক্ষোভ দমনে অভিযান চালাচ্ছে তারা। গতকাল বৃহস্পতিবার রুশ সেনারা দেশটির প্রধান শহরগুলোতে নামার পর সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীদের দেখামাত্র গুলির নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

কাজাখস্তানে বিক্ষোভকারীদের দেখামাত্র গুলির নির্দেশ

আজ শুক্রবার টেলিভিশনে দেয়া ভাষণে কাজাখ প্রেসিডেন্ট কাসিম-জোমার্ট তোকায়েভ বলেন, সন্ত্রাসীদের সতর্কবার্তা ছাড়াই নিরাপত্তা বাহিনীকে গুলির নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। সন্ত্রাসী হামলায় জড়িতরা আত্মসমর্পন না করলে নির্মূল করার হুমকিও দেয়া হয়।

তেল ও গ্যাসের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে গত রোববার শুরু হওয়া বিক্ষোভ গত কয়েকদিন ধরে অব্যাহত রয়েছে। এর মধ্যে মন্ত্রিসভা নিয়ে কাজাখস্তানের প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করলেও সরকারবিরোধী বিক্ষোভ থামছে না। ফলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাশিয়ার হস্তক্ষেপ চায় দেশটির প্রেসিডেন্ট, তাতে সাড়াও আসে।

কাজাখস্তানে বিক্ষোভকারীদের দেখামাত্র গুলির নির্দেশ

বিবিসি জানায়, সহিংস বিক্ষোভকারীদের ‘সন্ত্রাস’ আখ্যায়িত করে যে কোনো মূল্যে উত্তাল পরিস্থিতি সামলানোর চেষ্টা করছে কাজাখ সরকার। তবে সন্ত্রাসের কথা প্রত্যাখ্যান করেছে বিরোধী দলগুলো। চলমান বিক্ষোভে এখন পর্যন্ত ২৬ বিক্ষোভকারী ও ১৮ জন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে দাবি করে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সমঝোতার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়েছেন কাজাখস্তানের প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেন, খুনি ও অপরাধীদের সঙ্গে আলোচনা নয়, দেশি-বিদেশি সশস্ত্র অপরাধীদের মোকাবেলা করা হচ্ছে। এরা সন্ত্রাসী, তাদের আমরা ধ্বংস করব। এটা খুব শিগগিরই হবে।

এদিকে, এখন পর্যন্ত ৩ হাজারের বেশি বিক্ষোভকারী আটক হয়েছে, যা সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সহিংসতায় এখন পর্যন্ত ৩৫৩ পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য আহত হয়েছেন। সহিংসতা বন্ধ করার জন্য কাজাখ সরকার বৃহস্পতিবার জ্বালানির দাম বৃদ্ধির ওপর ১৮০ দিনের স্থগিতাদেশ দিয়েছে।

এর আগে গত বুধবার যৌথ নিরাপত্তা চুক্তি ‘কালেক্টিভ সিকিউরিটি ট্রিটি অর্গানাইজেশন’র (সিএসটিও) সহযোগিতা চান রুশপন্থী কাজাখ প্রেসিডেন্ট। রাশিয়া, আর্মেনিয়া, বেলারুশ, কাজাখস্তান, কিরগিজস্তান ও তাজিকিস্তান নিয়ে গঠিত সামরিক জোট তৎক্ষণাৎ সেনা পাঠানোর বিষয়টি অনুমোদন করে। বৃহস্পতিবারই রাজধানী আলমাআতায় পৌঁছায় রাশিয়ার সেনারা।

অন্যদিকে, কাজাখস্তান সরকারকে জনগণের প্রতি সংযম রক্ষার আহ্বান জানিয়েছে ইইউ। এক বিবৃতিতে সংগঠনটি জানিয়েছে, একটি শান্তিপূর্ণ সমাধান প্রয়োজন। জবাবে রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, আমরা বন্ধুত্বপূর্ণ দেশের সাম্প্রতিক ঘটনাকে বাইরে থেকে নিরাপত্তা ও অখণ্ডতাকে ক্ষুণ্ন করার একটি অপচেষ্টা হিসেবে বিবেচনা করি।