স্বীকৃতি না দিলেও তালেবানের ঘনিষ্ঠ হচ্ছে বিশ্বশক্তি

নরওয়ের রাজধানী অসলোতে তালেবান এবং ঊর্ধ্বতন মার্কিন ও ইউরোপীয় কর্মকর্তাদের মধ্যে আলোচনা হয়ে গেল গত সপ্তাহে। ফলাফল হিসেবে আফগানিস্তানে মানবিক সহায়তা বৃদ্ধির প্রতিশ্রুতি ও মানবাধিকার সম্পর্কিত দাবিগুলোর ওপর সামঞ্জস্য বিধানের চিত্র উঠে এসেছে। কিছু বিশ্লেষক বলেছেন, আলোচনার অর্থ হল প্রকৃতপক্ষে তালেবান সরকারের স্বীকৃতি। বিশ্বনেতারা মূলত ক্ষমতাসীন তালেবানের সঙ্গে দিন দিন ঘনিষ্ঠ হচ্ছে। আল জাজিরা।

অসলোতে তালেবান ও মার্কিন-ইউরোপীয় কর্মকর্তাদের মধ্যে আলোচনা

খবরে বলা হচ্ছে, কোনো বিদেশি সরকার এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে তালেবানের শাসনের বৈধতা স্বীকার করেনি। তবে স্বীকৃতি না দিলেও ইসলামিক এমিরেট অফ আফগানিস্তানের (আইইএ) সাথে বিশ্বশক্তি বিভিন্ন পর্যায়ে জড়িত রয়েছে।

অসলোতে আলোচনাটি ছিল ভারপ্রাপ্ত আফগান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি এবং তার প্রতিনিধিদলের ইউরোপে প্রথম আনুষ্ঠানিক সফর। গত বছরের আগস্টের মাঝামাঝি তালেবানরা কাবুল দখল করে এবং আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেয়। পরের মাসেই তারা সরকার গঠন করে।

ভারপ্রাপ্ত আফগান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি

গত ২৪ জানুয়ারি অসলো আলোচনার পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের কূটনীতিকরা তালেবানকে নানা আশ্বাস দিয়েছেন। তারা বলেছেন, দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নতি যত হবে, মানবিক সহায়তাও তত বাড়বে। মূলত আন্তর্জাতিক অধিকার গোষ্ঠী এবং আফগান কর্মীরা মনে করে, তালেবানের অধীনে অফগানিস্তানে মানবাধিকারের অবনতি হয়েছে।

অসলো আলোচনার পর মার্কিন-ইউরোপীয় যৌথ বিবৃতি ঘোষণা হয়েছে। তাতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় আফগানিস্তানে নির্বিচারে আটক, জোরপূর্বক গুম, মিডিয়া ক্র্যাকডাউন, বিচারবহির্ভূত হত্যা, নির্যাতন এবং নারী ও মেয়েদের শিক্ষা, কর্মসংস্থান, ভ্রমণের স্বাধীনতার ওপর নিষেধাজ্ঞাসহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ করেছেন। এসব বন্ধ করতে আরও পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য আহ্বান জানান তারা।

বিবৃতিতে আফগানিস্তানে মানবিক সংকট মোকাবেলায় জরুরি পদক্ষেপ এবং দেশজুড়ে আফগানদের দুর্দশা লাঘবের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথা তুলে ধরা হয়েছে।

গত বুধবার জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তেনিও গুতেরেস বলেছেন, আফগানিস্তান ‘একটি সুতোয় ঝুলে আছে’। কারণ তালেবানের দখলদারিত্ব এবং আফগানিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ৯ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি সম্পদ স্থগিত করায় অর্থনীতি স্থবির হয়ে পড়েছে। তিনি তালেবানকে মৌলিক মানবাধিকার রক্ষা করার আহ্বান জানান।