অ্যামনেস্টি: ইসরায়েল বর্ণবাদী রাষ্ট্র

ইসরায়েল নিজ দেশ ও অধিকৃত অঞ্চলগুলোতে বসবাস করা ফিলিস্তিনিদের সাথে বর্ণবাদী আচরণ করে। দেশটির আইন, নীতি ও আচরণে এই বর্ণবাদ ফুটে ওঠে। মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল কর্তৃক প্রকাশিত ‘ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের বর্ণবাদ’ শিরোনামের ২১১ পৃষ্ঠার এক প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়েছে। আলজাজিরা ও বিবিসি। 

ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের বিক্ষোভ

গতকাল মঙ্গলবার প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে ১৯৭৭ সালে নোবেল পুরস্কার জেতা অ্যামনেস্টি দাবি করে, ১৯৪৮ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে ইসরায়েল একটি ইহুদি জনসংখ্যাগত আধিপত্য প্রতিষ্ঠা ও বজায় রাখার সুস্পষ্ট নীতি অনুসরণ করেছে। ইহুদি ইসরায়েলিদের উপকারের জন্য ভূমির ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করছে। এগুলো করছে ফিলিস্তিনিদের সংখ্যা কমিয়ে আনা, তাদের অধিকার সীমিত করা এবং এই দখলকে চ্যালেঞ্জ করার ক্ষমতাকে বাধাগ্রস্ত করার মাধ্যমে।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল আরো বলেছে, ফিলিস্তিনিদের নিকৃষ্ট জাতি-গোষ্ঠীর মানুষ বলে মনে করে ইসরায়েল। এমনকি বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থাও জানিয়েছে, ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েল যে সকল অপরাধ করছে তা বর্ণবাদের আওতাভুক্ত। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের প্রতিবেদনে ওই সকল সংস্থার মূল্যায়নকেও সংযুক্ত করা হয়েছে।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাগনেস ক্যালামার্ড

অ্যামনেস্টি জানায়, ইসরায়েল জুড়ে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে বর্ণবাদের ব্যবস্থা প্রয়োগে প্রায় সমস্ত বেসামরিক প্রশাসন এবং সামরিক কর্তৃপক্ষ জড়িত।

মানবাধিকার সংস্থাটির সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাগনেস ক্যালামার্ড ফিলিস্তিনি বেদুইনদের চলমান উচ্ছেদের কথা তুলে ধরে বলেন, তারা নেগেভ এলাকার তিন শতাংশেরও কম জায়গায় বাস করে, এটা কি খুব বেশি? অন্যদিকে ফিলিস্তিনি ভূমিতে রাষ্ট্রীয় সহায়তায় ইসরায়েলি বসতি ও ফাঁড়িগুলো বহুগুণ বেড়েছে। পুরোটাই একটি সিস্টেম এবং তা হচ্ছে বর্ণবাদের অপরাধ।

অ্যামনেস্টি জানায়, বিশ্বব্যাপী প্রায় ছয় মিলিয়ন ফিলিস্তিনি শরণার্থী রয়েছে। ইসরায়েল প্রতিটি সুযোগে তাদের প্রত্যাবর্তনে বাধা দিয়েছে। আন্তর্জাতিক আইন এবং জাতিসংঘের রেজুলেশনগুলোকে উপেক্ষা করে ইসরায়েল ১৯৫০ সালের একটি বর্ণবাদী প্রত্যাবর্তন আইন গঠন করে, যা প্রত্যেক ইহুদিকে উচ্ছেদকৃত ফিলিস্তিনিদের বাড়িতে বসতি স্থাপনের অনুমতি দেয় কিন্তু ফিলিস্তিনিদের জন্য একই ধরনের অধিকার অস্বীকার করে।

এদিকে, অ্যামনেস্টির এই প্রতিবেদনকে পুরোপুরি মিথ্যা ও একপেশে বলে আখ্যা দিয়েছে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ। ইসরায়েলি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লিওর হায়াত বলেছেন, পুরো প্রতিবেদনটিকে ইহুদিবিরোধী বলা ছাড়া আমাদের আর কোনো উপায় নেই। পক্ষপাতমূলক এবং এটি ইসরায়েলবিরোধী অন্যান্য সংস্থার প্রতিবেদন থেকে তথ্য অনুলিপি করে তৈরি করা হয়েছে।