আইএইএ: চেরনোবিল বিকিরণে কোনো ঝুঁকি নেই

ইন্টারন্যাশনাল অ্যাটমিক এনার্জি এজেন্সি (আইএইএ) জানিয়েছে, পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের সাইটে বিকিরণের মাত্রা নিয়ে ইউক্রেন যে রিপোর্ট করেছে তাতে উদ্বেগের কিছু নেই। কারণ চেরনোবিলে বিকিরণ যে মাত্রায় রয়েছে, তা জনসাধারণের জন্য কোনো বিপদ ডেকে আনবে না। সিজিটিএন।

চেরনোবিল পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র

আইএইএ-এর ওয়েবসাইটে গতকাল শুক্রবার একটি বিবৃতি দেওয়া হয়েছে। তাতে সংস্থাটির মহাপরিচালক রাফায়েল মারিয়ানো গ্রোসি বলেছেন, চেরনোবিল সাইটে বিকিরণের মাত্রা নিম্ন পর্যায়ের রয়েছে এবং এক্সক্লুশন জোনে পরিমাপ করা অপারেশনাল রেঞ্জের মধ্যে রয়েছে।

ইউক্রেন গত বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের পরমাণু সংস্থাকে জানিয়েছে, অজ্ঞাত সশস্ত্র বাহিনী এক্সক্লুশন জোনের মধ্যে অবস্থিত চেরনোবিল প্ল্যান্টের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। ইউক্রেনের কর্মকর্তাদের মতে, কিয়েভের প্রায় ১৩০ কিলোমিটার উত্তরে বন্ধ থাকা বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি রাশিয়ান বাহিনী দুই পক্ষের মধ্যে যুদ্ধের পর দখল করে নেয়।

আইএইএ

এর আগে আইএইএকে ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল, ১৯৮৬ সালের চেরনোবিল দুর্ঘটনার কারণে যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, এখন সেই মাটিতে ভারি সামরিক যানবাহন চলার কারণে উচ্চ বিকিরণ হতে পারে। প্রতিক্রিয়া হিসাবে আইএইএ মূল্যায়ন করেছে, প্রতি ঘণ্টায় ৯৪৬ মাইক্রোসিভার্ট পর্যন্ত বিকিরণ স্বাভাবিক। সুতরাং ভয় নেই।

বিবৃতিতে আইএইএ আরও জানায়, ইউক্রেনের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে দেশটির পারমাণবিক শক্তি চুল্লিগুলো নিরাপদে পরিচালনা করে যাচ্ছে তারা। চেরনোবিল প্ল্যান্টের নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলতে পারে এমন কোনো পদক্ষেপ এড়াতে সর্বোচ্চ সংযমের আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।

আইএইএ প্রধান বলছেন, পারমাণবিক চুল্লিগুলোর সুরক্ষা এবং সুরক্ষার ওপর বিশেষ মনোযোগ দিয়ে ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করছি আমরা। সংস্থাটির পক্ষ থেকে পরিস্থিতির নিয়মিত আপডেট প্রদান অব্যাহত থাকবে।

চেরনোবিল বিপর্যয় ছিল একটি পারমাণবিক দুর্ঘটনা যা ১৯৮৬ সালের ২৬ এপ্রিল তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত ইউক্রেনের উত্তরে প্রিপিয়াত শহরের কাছে চেরনোবিল পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৪নং চুল্লিতে ঘটেছিল। এটিকে ইতিহাসের সবচেয়ে খারাপ পারমাণবিক বিপর্যয় হিসাবে বিবেচনা করা হয়।

আন্তর্জাতিক পারমাণবিক ইভেন্ট স্কেলে বিকিরণের সর্বোচ্চ তীব্রতা নিয়ে ঘটা দুটি দুর্ঘটনার মধ্যে চেরনোবিল দুর্ঘটনা একটি। আরেকটি ২০১১ সালে জাপানে ফুকুশিমা দাইচি পারমাণবিক বিপর্যয়। চেরনোবিল দুর্ঘটনার পর পরিবেশ দূষণমুক্তকরণের কাজে অন্তত ৫ লাখ কর্মী কাজ করেছিল। এর পেছনে খরচ হয়েছে আনুমানিক ১৮ বিলিয়ন সোভিয়েত রুবেল।