রুশ হামলায় জ্বলছে ইউরোপের সর্ববৃহৎ পারমাণবিক চুল্লি!

কয়েকদিন ধরেই রাশিয়ার পক্ষ থেকে পরমাণু যুদ্ধের হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। এবার সরাসরি পরমাণু বোমার হামলা না হলেও আক্রান্ত হয়েছে একটি পারমাণবিক চুল্লি। রুশ হামলায় দাউ দাউ করে জ্বলছে ইউরোপের সর্ববৃহৎ পারমাণবিক চুল্লি। খবর রয়টার্স।

জ্বলছে জাপোরিঝঝিয়া নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট

ইউক্রেনের এনেরহোডারে অবস্থিত জাপোরিঝঝিয়া নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্টে রুশ বাহিনী শুক্রবার ভোরে হামলা চালায় বলে ইউক্রেন সরকারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়। এতে এই প্ল্যান্টের বিভিন্ন স্থানে আগুন জ্বলতে শুরু করেছে। ইউক্রেনের ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষ এ আগুন নেভানোর চেষ্টা চালালেও রুশ বাহিনীর লাগাতার গোলাবর্ষণে তা সম্ভব হচ্ছে না।

জানা গেছে, ইউক্রেনের দক্ষিণে নাইপার নদীর তীরে অবস্থিত এই পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে ইউক্রেনের মোট বিদ্যুতের চাহিদার এক চতুর্থাংশ মেটানো হয়। পরমাণু হামলার কথা ওঠার পর থেকেই ইউক্রেন বারবার জাপোরিঝঝিয়া নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্টের উপর হামলা থেকে রাশিয়াকে বিরত থাকার আহ্বান জানায়। কিয়েভের দাবি, এই প্ল্যান্টে বিস্ফোরণ ঘটলে তা হবে চরম বিপর্যয়ের। রাশিয়ার পাশাপাশি সমগ্র ইউরোপের কাছেও ইউক্রেন আবেদন জানিয়েছে, যাতে রাশিয়ার এই ধরনের হামলা ঠেকানোর জন্য পর্যাপ্ত পর্যায়ে উদ্যোগ নেওয়া হয়।

জাপোরিঝঝিয়া নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট

এনেরহোডারের মেয়র দিমিত্রো অরলভ বলেন, শুক্রবার ভোরের দিকে রুশ বাহিনীর হামলায় পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটিতে আগুন লাগে। একটি টিভি চ্যানেলে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অরলভ জানান, ইউরোপের বৃহত্তম পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ভবন এবং ইউনিটগুলোতে ক্রমাগত শত্রুর গোলার কারণে আগুন লেগে যায়। এ ঘটনায় বৈশ্বিক নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়বে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি।

অবাক করা বিষয় হচ্ছে, যে মুহূর্তে যুদ্ধ পরিস্থিতি নিয়ে রাশিয়া-ইউক্রেন দ্বিতীয় দফায় আলোচনায় বসেছিল, সে সময়ই জাপোরিঝঝিয়া নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্টে হামলার এ ঘটনা ঘটে। সার্বিকভাবে দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনা থেকে কোনো সমাধান বের না হলেও ইউক্রেনের সাধারণ নাগরিকদের সুরক্ষিত জায়গায় পাঠাতে ‘মানবিক করিডোর’ তৈরি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ওই বৈঠকে। ইউক্রেনের প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, দ্রুত তৃতীয় পর্যায়ের বৈঠকে বসবে দুই দেশ।

এদিকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি দাবি করেন, রাশিয়াকে অতি শীঘ্রই ঠেকানো না হলে ইউরোপের বাকি অংশও নিরাপদ থাকবে না। তিনি সতর্ক করে বলেন, বিশ্বাস করুন, ইউক্রেন যদি না থাকে তাহলে লাটভিয়া, লিথুয়েনিয়া, এস্তোনিয়াও আর নিরাপদ থাকবে না।

প্রসঙ্গত, এককালে এই দেশগুলো সোভিয়েত ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত ছিল। এসব দেশের ন্যাটোতে যোগ দেওয়াকে কেন্দ্র করে ইউক্রেনে হামলা চালিয়েছেন পুতিন।