রাশিয়ার দখলে ইউরোপের বৃহত্তম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র

ইউরোপের বৃহত্তম জাপরোঝঝিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে রুশ সৈন্যরা। ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় এনারোদার শহরে অবস্থিত কেন্দ্রটি সেদেশের বিদ্যুৎ চাহিদার ২৫ শতাংশ যোগান দেয়। পরমাণু কেন্দ্রে রাশিয়ার এ আক্রমণ ও নিয়ন্ত্রণের নিন্দা জানিয়েছে পশ্চিমা দেশগুলো।

জ্বলছে জাপোরিঝঝিয়া নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট

রুশ সৈন্যরা স্থানীয় সময় শুক্রবার ভোরে জাপরোঝঝিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে আক্রমণ করে। এসময় গোলার আঘাতে ওই কেন্দ্রের পাশের একটি ৫-তলা প্রশিক্ষণকেন্দ্রে আগুন ধরে যায়। ইউরোপের সবচেয়ে বড় পারমাণবিক স্থাপনায় রুশ বাহিনীর হামলা ও আগুন লাগার খবরে কিছুক্ষণের মধ্যে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ে আন্তর্জাতিক মহলে।

তাৎক্ষণিক এক বিবৃতিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ওই এলাকায় সামরিক কার্যক্রম বন্ধ করতে রাশিয়ার প্রতি আহ্বান জানান। কানাডার প্রধাণমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো এক টুইটে লেখেন, জাপরোঝঝিয়া নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্টে জঘন্য হামলার বিষয়ে আমি ও উপ-প্রধানমন্ত্রী ক্রাইস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছি। এসব ‘অগ্রহণযোগ্য’ হামলা অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।

জাপোরিঝঝিয়া নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট

জাপরোঝঝিয়ায় রুশ বাহিনীর হামলাকে ‘দায়িত্বহীন’ অভিহিত করে ব্রিটিশ প্রধাণমন্ত্রী বরিস জনসন বলেছেন, এতে করে পুরো ইউরোপের নিরাপত্তা প্রত্যক্ষ হুমকির মুখে পড়তে পারে।

জাপরোঝঝিয়ায় রুশ বাহিনীর হামলার খবর প্রকাশ হলে সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেক ইউজার ইউক্রেনের উত্তরাঞ্চলীয় প্রিপেয়াত শহরের চেরনোবিল আণবিক কেন্দ্রে ১৯৮৬ সালের দুর্ঘটনা ও তেজষ্ক্রিয় ঘটনার কথা উল্লেখ করেন। জাপরোঝঝিয়া বিদ্যুৎকেন্দ্রে কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে চেরনোবিলের তুলনায় ১০ গুন ভয়াবহ পরিণতি হবে বলে জানায় ইউক্রেন সরকার।

আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ) তাৎক্ষণিক এক বিবৃতিতে পারমাণবিক স্থাপনাকে সামরিক সংঘাতের বাইরে রাখতে বিবদমান পক্ষগুলোর প্রতি আহ্বান জানায়। আগুন লাগার কিছুক্ষণের মধ্যে একটি বিবৃতি দেয় ইউক্রেনের পরমাণু শক্তি নিয়ন্ত্রক সংস্থা। বিদ্যুৎকেন্দ্র ও আশপাশের এলাকায় তাপমাত্রা স্বাভাবিক রয়েছে এবং কোনো তেজষ্ক্রিয়তা নিঃসরণ ঘটেনি বলে সংস্থাটি জানায়।

শেষ খবরে জানা গেছে, ইউক্রেনীয় বাহিনীর সঙ্গে কয়েক ঘন্টা লড়াই শেষে রুশ সৈন্যরা জাপরোঝঝিয়া বিদ্যুৎকেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। ইউক্রেনের পারমাণবিক স্থাপনা পরিদর্শন সংস্থা ও স্থানীয় প্রশাসন এ খবর নিশ্চিত করেছে।

ইউক্রেনীয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা বলেছে, স্বাভাবিক নিরাপত্তা বিধি অনুযায়ী জাপরোঝঝিয়ার নিয়মিত কর্মীরাই সেখানকার পারমাণবিক চুল্লি পরিচালনা ও বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে।