ভাগ্যের নির্মম পরিহাসের শিকার এক মন্ত্রী

তালেবান আসার আগে আফগানিস্তানের ক্ষমতায় থাকা ঘানি সরকারের অর্থমন্ত্রী খালিদ পায়েন্দা এখন ওয়াশিংটনে উবার চালক হিসেবে জীবিকা নির্বাহ করছেন। ভাগ্যের নির্মম পরিহাস যাদের গোলামি করে তিনি একসময় আফগানিস্তানের অর্থমন্ত্রীর পদ বাগিয়ে নিয়েছিলেন, তাদের দেশেই তার এমন দশা। এএনআই।

ঘানি সরকারের অর্থমন্ত্রী খালিদ পায়েন্দা এখন ওয়াশিংটনে উবার চালক হিসেবে জীবিকা নির্বাহ করছেন

২০২১ সালের ১৫ আগস্ট তালেবান যখন দেশটি দখল করে নেয়, তার এক সপ্তাহ আগে পায়েন্দা তার পদ থেকে সরে দাঁড়ান। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। তালেবান ক্ষমতায় আসে এবং পায়েন্দাকে দেশ ত্যাগ করতে হয়। একটি জনসভায় আশরাফ ঘানি পায়েন্দার নিন্দা করেছিলেন। এরপরই ঘটে পদত্যাগের ঘটনা।

দ্য ওয়াশিংটন পোস্টের খবরে বলা হয়েছে, অর্থমন্ত্রী সরকার পতনের কথা তখনও ভাবতে পারেননি। তবে অনুভব করেছিলেন, তিনি প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানির আস্থা হারিয়েছেন। আফগানিস্তানের মর্মান্তিক পতনের কয়েক মাস পরেও আসলে তার কোনো দোষ ছিল কিনা সেই প্রশ্ন এখনও পায়েন্দাকে তাড়া করে।

খালিদ পায়েন্দা

পায়েন্দা গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারের দ্রুত পতনের জন্য ঘানি সরকার ও তার সহযোগীদের দায়ী মনে করেন। তিনি বলেন, সরকারে সংস্কার আনার কোনো ইচ্ছা আমাদের ছিল না। এজন্য তালেবান সুযোগটা নিয়েছে।

তালেবান কাবুলে ঢোকার আগেই দেশ ছাড়েন আশরাফ ঘানি। যাওয়ার সময় তিনি প্রচুর পরিমাণ অর্থ সঙ্গে নিয়ে যান বলে খবর প্রকাশ হয়। তবে এ খবরের সত্যতাও মিলেছে পরবর্তীতে নানা জনের বক্তব্যে। ঘানি সরকারের দায়িত্বশীল মন্ত্রীরা মূলত আমেরিকান ডলারের ওপর টিকে ছিল।

তারা ঘূর্ণাক্ষরেও ভাবতে পারেনি তালেবান একদিন দেশটি দখল করে নেবে। এজন্য যুক্তরাষ্ট্রের দখলদার বাহিনী আফগান সেনাদের প্রশিক্ষণের নামে নিরাপরাধ নানা শ্রেণিপেশার মানুষকে হত্যা করে আসছিল।

এই অবস্থার মধ্যে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন সেনাদের আফগান থেকে সরিয়ে নেয়ার চুক্তি করেন তালেবানের সাথে। মার্কিন সেনা আফগান থেকে সরে যাওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যেই কাবুল দখল করে নেয় তালেবান, যা অত্যাধুনিক যুগের একটি বিস্ময় বলেও বর্ণনা করেছেন অনেকে।