ইমরান: কাশ্মির ও ফিলিস্তিন ইস্যুতে ব্যর্থ ওআইসি

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেছন, ফিলিস্তিনি এবং কাশ্মিরের ব্যাপারে ওআইসি ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। দুই অঞ্চলের জনগণকে আমরা কিছুই দিতে পারিনি। আমি দুঃখের সাথে বলতে পারি, আমরা কোনো প্রভাব রাখতে পারিনি। মঙ্গলবার ইসলামাবাদে সংসদ ভবনে অর্গানাইজেশন অফ ইসলামিক কোঅপারেশনের, ওআইসির ৪৮তম পররাষ্ট্রমন্ত্রী পরিষদের, সিএফএম উদ্বোধনী অধিবেশনে তিনি এসব কথা বলেন।

ওআইসির পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান (ডানে)

ওআইসির ভূমিকা সম্পর্কে তিনি বলেন, পশ্চিমা দেশগুলো ওআইসিকে গুরুত্ব সহকারে নেয়নি। কারণ আমরা একটি বিভক্ত ঘর এবং পশ্চিমা শক্তিগুলো তা ভাল করেই জানে। মুসলিমদের সংখ্যা ১.৫ বা দেড় শ কোটি হলেও ফিলিস্তিন-কাশ্মিরে নির্মম অবিচার বন্ধ করার জন্য আমাদের আওয়াজ তুচ্ছ। আমরা এক হতে পারিনি।

ইমরান খান বলেন, আন্তর্জাতিক আইন ফিলিস্তিন এবং কাশ্মিরের জনগণের পক্ষে ছিল। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবগুলো গণভোটের মাধ্যমে কাশ্মিরিদের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারকে সমর্থন করে। তবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কখনই সেই অধিকার নিশ্চিত করেনি।

২০১৯ সালের আগস্ট মাসে ভারত অধিকৃত কাশ্মিরের বিশেষ মর্যাদা কেড়ে নেওয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, মনে হচ্ছে- কিছুই ঘটেনি, কারণ ভারত কোনো চাপ অনুভব করে না। তারা মনে করে, আমরা বড়জোর একটি প্রস্তাব পাস করতে পারি। কিন্তু কোনো কাজ হবে না। সবকিছুই আগের মতোই চলবে।

ইমরান খান সতর্ক করেন, ওআইসি মূল ইস্যুতে ঐক্যবদ্ধ না হলে ফিলিস্তিনে দিবালোকে ডাকাতির মতো মানবাধিকার লঙ্ঘন ঘটতেই থাকবে। আমার একটাই আশা, সোশ্যাল মিডিয়ার কারণে প্রথমবারের মতো পশ্চিমা দেশগুলোতে সচেতনতা এসেছে। ওআইসির উচিত, এর চেয়ে অনেক বেশি সক্রিয় হওয়া। মোবাইল ফোন এবং ফিলিস্তিনিদের প্রতি অবিচারের তথ্য ছড়িয়ে দিতে হবে পুরো বিশ্বে।

তিনি বলেন, ভারত অধিকৃত কাশ্মিরের জনসংখ্যার পরিবর্তন করা হচ্ছে বাইরে থেকে বসতি স্থাপনকারীদের এনে। কিন্তু কেউ এটা নিয়ে চাপ দেয়নি, কারণ তারা মনে করে আমরা অকার্যকর।

ইসলামোফোবিয়ার বিরুদ্ধে প্রস্তাব: ইমরান খান বলেন, জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে সম্প্রতি ইসলামোফোবিয়ার বিরুদ্ধে একটি প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। এ প্রস্তাবে ১৫ মার্চকে ইসলামোফোবিয়ার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের আন্তর্জাতিক দিবস স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। বিশ্ব এখন বুঝতে পারছে, ইসলামফোবিয়া একটি বাস্তবতা এবং এটি মোকাবেলায় আরও কিছু করা দরকার।

ইমরান প্রশ্ন তোলেন, ইসলামকে কেন সন্ত্রাসবাদের সাথে তুলনা করা হল। এই স্টেরিওটাইপিংয়ের ফলাফল হিসেবে মসজিদ কিংবা ক্রাইস্টচার্চে হামলার হচ্ছে। এটা দুর্ভাগ্যজনক, মুসলিম বিশ্ব মুসলিমদের এই ভাবমূর্তিকে মোকাবেলা করতে পারেনি। যা করা উচিত ছিল তা হয়নি। মুসলিম দেশগুলোর প্রধানদের এ বিষয়ে অবস্থান নেওয়া উচিত ছিল।