চীনের বিনিয়োগের ফাঁদে শ্রীলঙ্কা!
- Details
- by আন্তর্জাতিক ডেস্ক
স্বাধীনতার পর গত সাত দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে সবথেকে খারাপ অর্থনৈতিক সংকটের সঙ্গে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে শ্রীলঙ্কা। এজন্য দেশ-বিদেশের অনেকেই সবচেয়ে বড় ঋণদাতা চীনকেই দায়ী করছেন। তাছাড়া দ্বীপ রাষ্ট্রটির সবগুলো সরকারই ধারাবাহিকভাবে দেশটির সার্বভৌম বন্ধনকে উপেক্ষা করেছে।
চীনের বিনিয়োগের ফাঁদে শ্রীলঙ্কা!
উন্নত অবকাঠামো, উচ্চ কর্মসংস্থান, আয়, অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার আশায় চীনের বিনিয়োগের কাছে নিজেদের আত্মসমর্পণ করেছে শ্রীলংকা। ফলে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধি পেলেও বছরের পর বছর ধরে ঋণে জর্জরিত ও অন্যের ওপর নির্ভরশীল রাখতে চীনের উদ্দেশ্যমূলক কৌশলের ব্যাপারে সতর্কতা বারবার উপেক্ষা করেছে দেশটি।
২০২১ সালের জুলাই মাসে ১ বিলিয়ন ডলার মূল্যের পূর্বপরিশোধিত বন্ডসহ ২০২২ সালে দেশটির প্রায় ৭ বিলিয়ন ডলারের ঋণ রয়েছে।
তামিল টাইগারদের সঙ্গে যুদ্ধের পর শ্রীলঙ্কা চীনকে ‘বন্ধু’ হিসাবে পেয়েছিল। সেতু, সড়ক, রেলপথ, বন্দর, বিমানবন্দর, বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল (এসইজেড), তেল শোধনাগার, শিল্প শহর, এলএনজি পাওয়ার প্লান্ট ইত্যাদির মতো অবকাঠামো প্রকল্পের মাধ্যমে শ্রীলঙ্কায় চীনের পদচিহ্ন দৃশ্যমান হয়েছে।
বছরের পর বছর ধরে শ্রীলঙ্কায় বিপুল চীনা বিনিয়োগ সত্ত্বেও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ হ্রাস, বিপুল বৈদেশিক ঋণ এবং ঋণ সেবার বাধ্যবাধকতাসহ দেশটি তার ইতিহাসের সবচেয়ে খারাপ অর্থনৈতিক সংকটে ভুগছে। খাদ্য, সার, জ্বালানি, বিদ্যুতের ঘাটতি এবং দামের ঊর্ধ্বগতির সংকট এখন সাধারণ মানুষের স্নায়ুতে আঘাত করেছে।
বর্তমান সংকটের কারণে রাজনৈতিক পতনের আশঙ্কায় এ বছরের জানুয়ারিতে শ্রীলঙ্কা সফরের সময় চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ইকে প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসে ঋণ পরিশোধ প্রক্রিয়া পুনর্গঠন করার অনুরোধ করেছিলেন। শ্রীলঙ্কায় দূষিত জৈব সার পাঠানো নিয়ে সাম্প্রতিক দ্বন্দ্বের কারণে চীন-শ্রীলঙ্কা সম্পর্ক খারাপ হওয়ার পরেই সফরে আসেন চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
বর্তমান সংকটগুলো শ্রীলঙ্কায় টেকসই কর্মসংস্থান এবং রাজস্ব উৎপাদনের জন্য চীনা বিনিয়োগের অক্ষমতাকে প্রকাশ করেছে। চীনের বিনিয়োগসমূহ শ্রীলঙ্কাকে তার ঋণ পরিশোধ করার জন্য যথেষ্ট বৈদেশিক মুদ্রার প্রবাহ নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছে। যদিও চীন এই বিষয়গুলো প্রত্যাখ্যান করে।
শ্রীলঙ্কা সরকার ১৯৮০ সাল থেকে দেশে বিদেশি বিনিয়োগকে আকৃষ্ট করতে বিনিয়োগ নীতিতে পরিবর্তন এনেছে। অবকাঠামো প্রকল্পের ক্ষেত্রে শ্রীলঙ্কার আমদানির ওপর ব্যাপক শুল্ক ছাড় উপভোগ করেছে চীন। ২০১০ সালে হাম্বানটোটা বন্দর নির্মাণের পর থেকে ২০২০ সালে কলম্বো পোর্ট সিটি প্রকল্পের জন্য ভূমি পুনরুদ্ধার পর্যন্ত কয়েক বছর ধরে চীনকে যে পরিমাণ শুল্ক ছাড় দেওয়া হয়েছে তা শ্রীলঙ্কার সাধারণ জনগণের পাওয়া সুবিধার সঙ্গে কোনোভাবেই মেলে না।
চীনা বিনিয়োগ প্রকল্প বাস্তবায়ন এবং বিপুল সংখ্যক চীনা বিশেষজ্ঞ ও প্রযুক্তিবিদদের নিয়োগের কারণে স্থানীয়দের কর্মসংস্থানের ক্ষতির বিষয়টি এখনও জনসাধারণের নজরে আসেনি।
পরিহাসের বিষয় হল-নিজেদের কর্মসংস্থানের যে ক্ষতি হচ্ছে সে ব্যাপারে ট্রেড ইউনিয়নগুলো তাদের দাবির বিষয়ে যথেষ্ট আওয়াজ তুলতে ব্যর্থ হয়েছে।
শ্রীলঙ্কায় পাকিস্তানের মতো পরিস্থিতি এড়াতে চায় চীন। পাকিস্তানে সিপিইসি প্রকল্প স্থানীয়দের কর্মসংস্থান দিতে ব্যর্থ হওয়ায় বেলুচিস্তানে স্থানীয়রা নানা স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ করেছে। এই রকম পরিস্থিতি যেন না হয় সেই চেষ্টাও করছে চীন।
সূত্র: এএনআই
গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...
খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর
Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.
Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.