ক্ষুব্ধ মুসলিম বিশ্ব, তিন দেশে ভারতের রাষ্ট্রদূতকে তলব

বিশ্বনবী মুহাম্মদ স. সম্পর্কে ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপি নেত্রীর বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য ক্রমবর্ধমান ক্ষোভ পুরো ভারতকে কাঁপিয়ে দিয়েছে। এ অবস্থায় ভারতের প্রতি ক্ষেপেছে মুসলিম বিশ্ব। ওআইসি এবং উপসাগরীয় দেশগুলো ভারতের তীব্র নিন্দা করেছে। কয়েকটি দেশ ভারতের রাষ্ট্রদূতকে তলব করে জবাবও চেয়েছে। বিশেষ করে কুয়েত, কাতার, ইরান ও সৌদি আরব কড়া ভাষায় ভারতের সমালোচনা করেছে। এ ঘটনায় ভারত মুসলিম দেশগুলোকে শান্ত করার চেষ্টা করতে বাধ্য হয়েছে। বিবিসি।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি

খবরে বলা হচ্ছে, বিশ্বনবীকে স. নিয়ে বাজে মন্তব্যের পর কুয়েত, কাতার এবং ইরান গতকাল রোববার ভারতীয় রাষ্ট্রদূতদের তলব করে। আজ সোমবার সৌদি আরবও ভারতের কড়া নিন্দা করেছে। কাতার বলেছে, এই অপরাধের জন্য ভারতকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে।

কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, এই ধরনের ইসলামফোবিক মন্তব্য করে শাস্তি ছাড়াই পার পেয়ে যাওয়া মানবাধিকার সুরক্ষার ক্ষেত্রে বিপদ ডেকে আনতে পারে। এসব ঘটনা মানবজাতিকে আরও কুসংস্কার ও প্রান্তিকতার দিকে নিয়ে যেতে পারে। যা সহিংসতা ও ঘৃণার চক্র তৈরি করবে। সৌদি আরব বিবৃতিতে কিছু কড়া শব্দও ব্যবহার করেছে।

কাতারে ভারতের রাষ্ট্রদূত দীপক মিত্তাল বলেছেন, কিছু অখ্যাত লোকের মন্তব্য ভারত সরকারের মতামতের প্রতিনিধিত্ব করে না। বিজেপির সিনিয়র নেতা এবং অন্যান্য কূটনীতিকরাও বিজেপি নেত্রী নুপুর শর্মার বিতর্কিত বক্তব্যের নিন্দা করেছেন।

৫৭ সদস্যের অর্গানাইজেশন অব দ্য ইসলামিক কনফারেন্স (ওআইসি) এবং পাকিস্তানও ভারতের সমালোচনা করেছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, বিষয়টি নিয়ে বিজেপি ও ভারত সরকারের শীর্ষ নেতৃত্বকে প্রকাশ্যে বিবৃতি দিতে হতে পারে। তারা বলছেন, তা না করলে আরব বিশ্ব ও ইরানের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক নষ্ট হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।

ভারতের ঝুঁকি অনেক বেশি

মুসলিম বিশ্বের সাথে সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হলে ঝুঁকি বেশি ভারতের। কারণ এসব দেশের সাথে ভারতের বিশাল বাণিজ্যিক সম্পর্ক রয়েছে। বিশেষ করে উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদের (জিসিসি) সাথে ভারতের বাণিজ্য সম্পর্ক অত্যন্ত শক্তিশালী।

এসব দেশের মধ্যে রয়েছে কুয়েত, কাতার, সৌদি আরব, বাহরাইন, ওমান এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত। ২০২০-২১ সালে এসব দেশের সাথে ভারতের বাণিজ্য ৮৭ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। লাখ লাখ ভারতীয় এসব দেশে বাস করে ও কাজ করে। তারা লাখ লাখ ডলার রেমিট্যান্স দেশে পাঠায়। আমদানির ক্ষেত্রেও ভারতের কাছে মুসলিম বিশ্বের এই অঞ্চলটি শীর্ষস্থানীয় উৎস।

২০১৪ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এই অঞ্চলে নিয়মিত সফর করেছেন। দেশটি ইতোমধ্যেই সংযুক্ত আরব আমিরাতের সাথে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর করেছে এবং বিস্তৃত চুক্তির জন্য জিসিসির সাথে আলোচনা করছে৷