হুথি: ইসরায়েলকে সুবিধা দিতেই ইয়েমেনে হামলা চালাচ্ছে সৌদি

ইয়েমেনের প্রতিরোধ আন্দোলন আনসারুল্লাহ’র শীর্ষ নেতা সাইয়্যেদ আবদুল মালিক হুথি বলেছেন, ইয়েমেনে ইসরায়েলি কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করার জন্য দেশটিতে আগ্রাসন চালিয়েছে সৌদি আরব ও তার নেতৃত্বাধীন জোট। ২০১৫ সাল থেকে এ জোট ইয়েমেনে অব্যাহতভাবে হামলা চালিয়ে আসছে। খবর ইসলাম টাইমস।

সাইয়্যেদ আবদুল মালিক হুথি

সম্প্রতি রাজধানী সানায় গোত্র প্রধান ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের এক সমাবেশে বক্তব্য দেওয়ার সময় এই দাবি করেন আবদুল মালিক। গত বুধবারের ওই সমাবেশে তিনি আরো দাবি করেন, তাদের সশস্ত্র বাহিনীর হাতে এখন এমন ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে, যা শনাক্ত বা প্রতিহত করতে মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্ষম নয়।

তিনি বলেন, আমাদের কাছে এখন অত্যন্ত নিখুঁতভাবে টার্গেটে আঘাত হানতে সক্ষম ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে, যেগুলো অনেক দূরের লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালাতে পারে। সর্বাধুনিক মার্কিন প্রতিরক্ষা সিস্টেমও সেসব ক্ষেপণাস্ত্র ঠেকাতে ব্যর্থ হয়েছে।

সৌদির তেল স্থাপনায় চালানো ইয়েমেনি হামলা, ফাইল ছবি

আবদুল মালিক বলেন, ইয়েমেনি সেনারা উন্নত ড্রোন নির্মাণসহ বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা উন্নয়নের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এরই মধ্যে এমন প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা তৈরিতে সক্ষম হয়েছে, যা সব ধরনের ড্রোন ভূপাতিত করতে সক্ষম। আমাদের তৈরি করা ক্ষেপণাস্ত্র ঠেকাতে সক্ষম- এমন প্রতিরক্ষা সিস্টেম সংগ্রহ করতে সৌদি সরকার বিভিন্ন দেশের সাথে যোগাযোগ করছে। এমনকি তারা ইসরায়েলেরও সহযোগিতা চেয়েছে।

ইয়েমেনে ইসরায়েলের জন্য পথ খুলে দেওয়া এবং সেখানে ইসরায়েলি কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠাই সৌদি আগ্রাসনের মূল লক্ষ্য- এমন মন্তব্য করে আবদুল মালেক হুথি বলেন, সৌদি আগ্রাসন ঠেকানোই এখন আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য। কারণ সামরিক হুমকিগুলো এখনো রয়ে গেছে।

আনসারুল্লাহর এই নেতা অভিযোগ করেন, বর্তমানে চলমান যুদ্ধবিরতির মধ্যেই সমঝোতার শর্ত লঙ্ঘন করে হামলা চালাচ্ছে রিয়াদ। এছাড়া সৌদি নেতৃত্বাধীন সেনারা জ্বালানিবাহী ইয়েমেনি জাহাজগুলো আটক করছে, যা যুদ্ধবিরতির শর্তের লঙ্ঘন।

গত ২ এপ্রিল উভয় পক্ষের মধ্যে যুদ্ধবিরতি শুরু হয়। সম্প্রতি এটি আবারো নবায়ন করা হয়েছে। সৌদির গুরুত্বপূর্ণ নানা স্থাপনায় ব্যাপক ড্রোন হামলা ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ঠেকাতে ব্যর্থ হয়েই রিয়াদ ইয়েমেনের সঙ্গে যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

উল্লেখ্য, আরব বসন্তের জেরে ইয়েমেনেও সরকার পতনের আন্দোলন শুরু হয়। সেই প্রেক্ষিতে সৌদি সরকার ২০১৫ সালে কয়েকটি আরব দেশকে সঙ্গে নিয়ে ইয়েমেনে আগ্রাসন শুরু করে। ইয়েমেনও সমান তালে জবাব দিয়ে যাচ্ছে। ইয়েমেনে চালানো সৌদি আগ্রাসনে অস্ত্র সরবরাহসহ নানা ধরনের সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র, ইসরাইল ও পশ্চিমা শক্তিগুলো।