ইউরোপে গ্যাসের দাম বেড়েছে ১০ গুণ, ছোট ব্যবসায় ধস

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে ইউরোপে গ্যাসের দাম এখন আগের তুলনায় ১০ গুণ বেশি। জ্বালানির দামের বৃদ্ধির প্রবণতা মূলত শুরু হয়েছিল কোভিড-১৯ মহামারিতে। পররবর্তীতে অর্থনীতি পুনরায় উদ্ধার হওয়ার পথে শুরু হয় যুদ্ধ। এতে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। ধস নেমেছে ছোট ব্যাবসায়। খবর টিআরটি ওয়ার্ল্ড।

ইউরোপে গ্যাসের দাম বেড়েছে ১০ গুণ, ছোট ব্যবসায় ধস

খবরে বলা হচ্ছে, আসছে শীতে ইউরোপবাসী তাদের ঘর গরম করতে গ্যাসের জন্য লড়াই করবে। শিল্পের পাশাপাশি ছোট ব্যবসাও হুমকির সম্মুখীন হয়েছে। গ্যাস বিল পরিশোধ করা তাদের জন্য অসাধ্য হয়ে পড়েছে। এতে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে অধিকাংশ ছোট ব্যবসা।

২০২১ সালে রাশিয়া থেকে ইউরোপে গ্যাস আমদানি হয়েছে মোট চাহিদার প্রায় ৪৫ শতাংশ। যুদ্ধের পরও ইউরোপ রাশিয়ার গ্যাসের উপর নির্ভরশীল। রাশিয়া উচ্চমূল্যে গ্যাস বিক্রি করে মুনাফা অর্জন করছে।

চলতি সেপ্টেম্বরের শুরুতে রাশিয়া নর্দস্ট্রিম ১ পাইপলাইনের মাধ্যমে জার্মানিতে গ্যাস সরবরাহ সম্পূর্ণ বন্ধ করার ঘোষণা দেয়। ইউরোপীয় ইউনিয়নের বৃহত্তম অর্থনীতি দেশ জার্মানি। হাঙ্গেরি, চেক প্রজাতন্ত্রসহ মধ্য ইউরোপের দেশগুলোর পাশাপাশি জার্মানিও রাশিয়ান গ্যাসের ওপর সবচেয়ে বেশি নির্ভরশীল। এ অবস্থায় রাশিয়া গ্যাস সরবরাহ কমিয়ে দেওয়ায় ইইউ কর্মকর্তারা অভিযোগ করেন, রাশিয়া জ্বালানিকে যুদ্ধের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহা করছেন।

এদিকে অ্যালুমিনিয়াম এবং জিঙ্কের মতো অলৌহঘটিত ধাতু উৎপাদকরা সতর্ক করে দিয়েছেন, উচ্চ জ্বালানি ব্যয়ের সমাধান না হলে শিল্প ধসে পড়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। ইউরোপের জিঙ্ক এবং অ্যালুমিনিয়াম উৎপাদনের অন্তত ৫০ শতাংশ ইতোমধ্যে অফলাইনে রয়েছে এবং অনেক কোম্পানি কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করেছে।

ইউরোপজুড়ে জ্বালানির ওপর নির্ভরশীল এমন প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের কাজের সময় কমিয়ে আনা হয়েছে। ব্রিটেনে হাজার হাজার মানুষ ‘ডোন্ট পে ইউকে’ ক্যাম্পেইনের জন্য সাইন আপ করেছে। ‘ডোন্ট পে ইউকে’ হলো ব্রিটেনের একটি অ্যাডভোকেসি গ্রুপ, যারা ভোক্তাদের জ্বালানি বিল বয়কট করার আহ্বান জানায়।

আগামী অক্টোবর থেকে তারা জ্বালানি বিল বয়কট করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে এবং ইতালিতে এই সপ্তাহে অনুরূপ উদ্যোগ চালু হয়েছে। চেক প্রজাতন্ত্রে ৭০ হাজার মানুষ রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইইউ নিষেধাজ্ঞার অবসান এবং দেশটির সরকারের পদত্যাগ চেয়ে সেপ্টেম্বরের শুরুতে রাস্তায় নেমে আসে।