ইউক্রেনকে ৪৮ ঘন্টার সময় বেঁধে দেবেন পুতিন!

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ডনবাস ও দক্ষিণাঞ্চল থেকে সৈন্য প্রত্যাহার করতে ইউক্রেনকে ৪৮ ঘন্টা সময় বেঁধে দেবেন। আজ বিকেলে রাশিয়ার জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠক থেকে এ সংক্রান্ত ঘোষণা আসতে পারে। রাশিয়ার কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে এ খবর বেরিয়েছে।

ডনবাস ও দক্ষিণাঞ্চল থেকে সৈন্য প্রত্যাহারে পুতিন ইউক্রেনকে সময় বেঁধে দেবেন বলে খবর বেরিয়েছে

অজ্ঞাতনামা সূত্রের বরাতে পরিবেশিত খবরে বলা হয়, রোববার সন্ধ্যায় রাশিয়ার তদন্ত কমিটির প্রধান ও মুখ্য প্রসিকিউটর আলেক্সান্ডার ইভানোভিচ বাস্ত্রিকিনের সাক্ষাতের পর পুতিন রাশিয়ার জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠক আয়োজনের নির্দেশ দেন। আজ বিকেলে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে পুতিন ইউক্রেনকে দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, খেরসন ও জাপরোঝঝিয়া থেকে সৈন্য প্রত্যাহারে ৪৮ ঘন্টা সময় বেঁধে দেবেন বলে কর্মকর্তারা মনে করছেন।

কিয়েভের মার্কিন দূতাবাস ইউক্রেনে অবস্থানরত যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের অবিলম্বে সে দেশ ছেড়ে যেতে বলেছে। বিমান চলাচলের সুযোগ সীমিত হওয়ায় মার্কিন নাগরিকদের স্থলপথে ইউক্রেন ছাড়তে বলা হয়েছে।

অসমর্থিত সূত্রে জানা গেছে, কিয়েভে অবস্থিত ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোর দূতাবাসকে অবিলম্বে শহর ছাড়তে বলা হয়েছে। আপাতত পোল্যান্ডের রিজেসৌ শহরে দূতাবাস ও মিশনগুলোর কার্যক্রম স্থানান্তরের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

এদিকে ক্রেমলিনের উচ্চপদস্থ সূত্রের বরাতে রুশ সংবাদপোর্টাল ভেদোমস্তি জানিয়েছে, জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠক থেকে পুতিন ইউক্রেন অভিযানের কমান্ডে বড় রদবদলের ঘোষণাও দিতে পারেন। বেলারুশকে সঙ্গে নিয়ে আগ্রাসন রোধের ঘোষণাও আসতে পারে।

জানা গেছে, রাশিয়ার জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকের সমসময়ে বেলারুশেও জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠক ডেকেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্ডার লুকাশেঙ্কো। বৈঠকে বেলারুশ-ইউক্রেন সীমান্তে রাশিয়া ও বেলারুশের সৈন্যদলের সমন্বয়ে একটি যৌথ আঞ্চলিক সেনাদল মোতায়েনের বিষয় আলোচনা হতে পারে।

এর আগে গতকাল রাশিয়ার তদন্ত কমিটির প্রধান বাস্ত্রিকিন ক্রেমলিনে পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এ সময় তিনি ক্রিমিয়া সেতুতে গাড়িবোমা হামলার ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন। ইউক্রেনীয় গোয়েন্দা সংস্থা এসবিইউ গাড়িবোমা হামলার পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন করেছে জানিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, হামলায় ব্যবহৃত গাড়িটি বুলগেরিয়া, জর্জিয়া, এস্তোনিয়া হয়ে রাশিয়ায় প্রবেশ করে। রাশিয়ার এবং অন্য কয়েকটি দেশের নাগরিকরা এ হামলায় সহায়তা করেছে।

বাস্ত্রিকিনের সঙ্গে বৈঠকের পর পুতিন বলেন, ক্রিমিয়া সেতুতে সন্ত্রাসী হামলার লেখক, কুশীলব ও দর্শক ইউক্রেন। কোনো সন্দেহ নেই যে ইউক্রেনীয় গোয়েন্দা সংস্থা রাশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ বেসামরিক অবকাঠামো লক্ষ্য করে এ হামলা চালিয়েছে।

ক্রিমিয়া সেতুতে হামলার জন্য ইউক্রেনকে অভিযুক্ত করার কয়েক ঘণ্টার মাথায় আজ সকালে দেশটির গোয়েন্দা সংস্থা এসবিইউর সদর দপ্তর মিসাইল হামলায় ধ্বংস করেছে রাশিয়া। লভিভ, খারকিভ, বুরশিতনস্কায়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ বেশকিছু সামরিক-বেসামরিক অবকাঠামোতেও হামলা হয়েছে। এর ফলে পুরো ইউক্রেন বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়তে পারে বলে জানিয়েছে দেশটির পরিষেবা সংস্থা এনারহোদার। বুরশতিস্কায়া বিদ্যুৎকেন্দ্র অচল হওয়ায় বিদ্যুৎ ব্ল্যাকআউটের কবলে পড়েছে পড়েছে হাঙ্গেরি, স্লোভাকিয়া ও রোমানিয়া।

ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী ডেনিস শিমহাল বলেছেন, কাস্পিয়ান ও কৃষ্ণ সাগর থেকে রুশ বাহিনী কমপক্ষে ৮৩টি ক্রুজ মিসাইল ছুঁড়েছে। কিয়েভসহ ইউক্রেনের নয়টি অঞ্চলে ১১টি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় এসব হামলা চালানো হয়। ইউক্রেনের শিক্ষামন্ত্রী সেরহি স্কারলেত এক সপ্তাহের জন্য সব স্কুলে অনলাইন ক্লাস চালুর নির্দেশ দিয়েছেন।