পার্টটাইমেও মহানায়ক ডি মারিয়া

নায়ক হলে যে কোনো গল্পের পুরোটা জুড়ে নাম থাকতে হবে। প্রাধান্য বিস্তার করতে হয় সবকিছুতে। কিন্তু অনেক সময় পুরো গল্পে সুবাস না ছড়িয়েও নায়কের উপাধি জুটানো সম্ভব। সময়ের গুরুত্ব বোঝে দারুণ প্রতিকূলতায় প্রয়োজনের খাতিরে নিদারুণ ভূমিকা পালন করা সম্ভব। অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া তারই জলজ্যান্ত একটা উদাহরণ।

বিশ্বকাপ হাতে জুভেন্টাস তারকা

ইনজুরির কারণে সদ্য শেষ হওয়া কাতার বিশ্বকাপে নিয়মিত আর্জেন্টিনার একাদশে জায়গা হয়নি ডি মারিয়ার। যে কয়েক ম্যাচে শুরুর একাদশে মাঠে নেমেছেন, খেলতে পারেননি পুরো সময়। শঙ্কা থাকায় জুভেন্টাসের তারকা উইঙ্গারকে নিয়ে বাজি ধরতে চাননি প্রধান কোচ লিওনেল স্ক্যালোনি। পিছে না আবার একেবারেই হারাতে হয় প্রিয় ছাত্রকে।

গ্রুপ পর্বের প্রথম তিন ম্যাচে শুরুর একাদশে ছিলেন ডি মারিয়া। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে রাউন্ড অব সিক্সটিনের ম্যাচেও খেলেছেন প্রথম মিনিট থেকেই। এরপরই পুরোনো চোট জেঁকে বসে সাবেক প্যারিস সেন্ট, পিএসজি তারকার। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে কোয়ার্টার ফাইনালে মাঠে নামেন বদলি হিসেবে। তবে শেষ চারে নেদারল্যান্ডসকে হারানোর দিনে মাঠেই নামা হয়নি ডি মারিয়ার।

অবশ্য ডি মারিয়ার পুরোপুরি সুস্থ হতেও বেশি সময় লাগেনি। ফাইনালের আগে স্বস্তি ফেরে আর্জেন্টিনা শিবিরে। অনুমিতভাবেই শুরুর একাদশে ডি মারিয়াকে রেখে ৪-৩-৩ ফরমেশন সাজান স্ক্যালোনি। এর ফলটাও তো হাতেনাতেই পেয়েছেন সাবেক এই ডিফেল্ডার।

ম্যাচের ৭৯ মিনিট পর্যন্ত আর্জেন্টিনার ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে থাকার মূল কারিগর ডি মারিয়া। ২৩ মিনিটে এই উইঙ্গার ফ্রান্সের ডি বক্সে ফাউলের শিকার হলে রেফারি পেনাল্টির বাঁশি বাজান। স্পট কিক থেকে গোল করে দলকে এগিয়ে নেন মেসি। এর ১৩ মিনিট পর নিজেই জালে বল জড়ান ডি মারিয়া।

ম্যাচের ৬৪ মিনিটে ডি মারিয়াকে তুলে মার্কোস আকুনাকে বদলি নামান স্ক্যালোনি। বাকি সময়ে তার অভাবে হারে হারে টের পায় আর্জেন্টিনা। ডি মারিয়া না থাকায় আক্রমণে ধার কমে আসে লা আলবিসেলেস্তেদের। সে সুযোগে প্রতিপক্ষের ওপর উল্টো চাপ বাড়ায় দিদিয়ের দেশমের শিষ্যরা। ফলও পায় হাতেনাতে।

৮০ এবং ৮১ মিনিট পরপর দুই গোল করে ফ্রান্সকে ম্যাচে ফেরান কিলিয়ান এমবাপ্পে। অতিরিক্ত সময়ে দুই দল আরও একটি করে গোল করে। শেষপর্যন্ত টাইব্রেকারে গিয়ে জয় তুলে নেয় আর্জেন্টিনা।

এমন একটি টুর্নামেন্ট শেষে সবচেয়ে বড় কৃতিত্বের দাবিদার লিওনেল মেসি। গোলপোস্টের নিচে বিশ্বস্ত হাতজোড়ার কারিকুরিতে এমিলিয়ানো মার্টিনেজও নিজেকে নিয়ে গেছেন ইতিহাসের পাতায়। তবে আর্জেন্টিনার তৃতীয় শিরোপা জয়ে এই দুইজনের পর অবলীলায় ডি মারিয়ার নামটাও স্মরণ করতে হবে সবাইকে।