আপনি পড়ছেন

ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে রাশিয়ার তেল-গ্যাসসহ নানা ধরনের পণ্যের বাণিজ্য, পরিবহন ইত্যাদি ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ইউরোপ-আমেরিকার নানা দেশ। এতে সংকটে পড়ে গেছে পুরো বিশ্ব। তবে ঘুরপথে ঠিকই রাশিয়ার তেল নিচ্ছে নিষেধাজ্ঞা আরোপকারী দেশগুলো। আর এ ব্যবসার মধ্যস্থতাকারী হিসেবে ভালো লাভ তুলে নিচ্ছে ভারত। ভারতের সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

russian oil shipরাশিয়ার তেলবাহী জাহাজ

গতকাল রোববার এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বৈশ্বিক এ সংকটের সময়ে তেলের বাজারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে ভারত। ইউরোপ-আমেরিকার নিষেধাজ্ঞার ফাঁক-ফোকর গলিয়ে দেশটি গত বছর রাশিয়ার কাছ থেকে সস্তায় রেকর্ড পরিমাণ তেল কিনে। তারা সেই তেলই পরিশোধনের পর যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে রপ্তানি করছে।

ওয়াশিংটন থিংক ট্যাংক সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যাডিজের সিনিয়র ফেলো বেন কাহিল বলেন, পশ্চিমা বিশ্ব রাশিয়ার তেলবাণিজ্যে নিষেধাজ্ঞার ক্ষেত্রে দুটি প্রধান বিষয় সামনে রেখেছিল। সেগুলো হচ্ছে, জ্বালানি খাতে রাশিয়ার রাজস্ব আয় কমানো এবং বাজারে তেল সরবরাহ স্বাভাবিক রাখা। তাই তারা চীন ও ভারতে রাশিয়ার তেল রপ্তানিতে সে অর্থে কোনো বাধা দেয়নি। তারা জানতোই চীন ও ভারত কম দামে রাশিয়া থেকে অপরিশোধিত তেল কিনছে এবং পরে সেটি পরিশোধন করে বাজারমূল্যেই রপ্তানি করছে।

russian oil 2রাশিয়ার তেল যাচ্ছে ইউরোপ-আমেরিকাতেই

মজার ব্যাপার হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্র সেই তেলের একজন বড় ক্রেতা। ডেটা ইন্টেলিজেন্স ফার্ম কেপ্লারের থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে, গত জানুয়ারি মাসে ভারত থেকে প্রতিদিন প্রায় ৮৯ হাজার ব্যারেল পেট্রোল ও ডিজেল কিনেছে নিউইয়র্ক। ভারতের মতো একটি দেশের কাছ থেকে পরিমাণটা অনেক বেশি।

গতকাল রোববার যুক্তরাষ্ট্র ও ইইউ রাশিয়ার পেট্রোলিয়াম রপ্তানিতে নতুন যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, তাতে ভারতের এই তেল ব্যবসা আরও চাঙ্গা হবে। কারণ ইউরোপের দেশগুলো এখন থেকে আর সরাসরি রাশিয়ার তেল পাবে না। তবে চাহিদা ঠিকই থাকবে। আবার রাশিয়াও বলেছে, প্রয়োজনে আগের চেয়ে আরও সস্তায় তারা চীন-ভারতসহ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে তেল সরবরাহ করবে। ইউরোপের দেশগুলো তাই এশিয়া থেকেই তেল নিতে বাধ্য হবে। আর তাতেই বাজিমাত করবে ভারত।

ভারতের দাবি, তারা এক্ষেত্রে কোনো অনিয়ম করছে না। কেননা যখন রাশিয়ার অপরিশোধিত তেল আমদানি করে তা পরিশোধনের মাধ্যমে রপ্তানি করা হলে এটি কোনোভাবেই আর রাশিয়ার তেল বলে গণ্য করার উপায় নেই।

গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনের ওপর হামলা শুরু করলে পশ্চিমা বিশ্ব অনেকভাবেই রাশিয়ার তেলবাণিজ্য বন্ধের চেষ্টা করে আসছে। তবে তারা নিজেরাই রাশিয়ার ওপর থেকে নির্ভরশীলতা কাটাতে পারছে না। ফলে সরাসরি না হলেও ঘুরপথে ঠিকই রাশিয়ার তেল তারা নিতে বাধ্য হচ্ছে। এরই মাঝে লাভবান হচ্ছে ভারত ও চীনের মতো দেশগুলো।

Get the latest world news from our trusted sources. Our coverage spans across continents and covers politics, business, science, technology, health, and entertainment. Stay informed with breaking news, insightful analysis, and in-depth reporting on the issues that shape our world.