ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা ১১ হাজার ছাড়ালো

তুরস্ক ও সিরিয়ায় ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা ১১ হাজার ছাড়িয়েছে। এর মধ্যে তুরস্কে কমপক্ষে ৮ হাজার ৫৭৪ জন ও সিরিয়ায় ২ হাজার ৬৫০ জনের প্রাণহানির কথা জানিয়েছেন স্থানীয় কর্মকর্তারা।

তুরস্কের জরুরি বিভাগের ১২ হাজার কর্মী উদ্ধার কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছে

তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিচেপ তায়েপ এরদোয়ান ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত ১০টি প্রদেশে তিন মাসের জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন। আজ ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত খ্রামানমারাস শহরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ ঘোষণা দেন।

সংবাদ সম্মেলনে এরদোয়ান বলেন, এখন পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী তুরস্কে ৮ হাজার ৫৭৪ জন প্রাণ হারিয়েছেন। আহত হয়েছেন ৪৯ হাজার ১৩৩ জন। মোট ৬ হাজার ৪৪৪টি ভবন বিধ্বস্ত হয়েছে। উদ্ধার তৎপরতা এগিয়ে নিতে ও দুর্গত মানুষের সাাহয্যে সরকার সর্বশক্তি নিয়োগ করেছে।

তিনি বলেন, ভূমিকম্পে ঘরবাড়ি হারিয়ে যারা আশ্রয়হীন হয়েছেন, তাদেরকে উদ্বিগ্ন না হবার আহ্বান জানাচ্ছি। সরকার কোনোভাবেই আপনাদের পথে বসিয়ে রাখবে না। দুর্গত এলাকাগুলোতে আশ্রয় শিবির খোলা হয়েছে। এর বাইরে আনতালিয়া, আলানিয়া ও মারসিন প্রদেশে হোটেল মালিকদের সঙ্গে সরকারের চুক্তি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষেরা সেখানে যতদিন প্রয়োজন অবস্থান করতে পারবেন।

ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে সরকারের তরফ থেকে আর্থিক সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে আমরা প্রতি পরিবারকে ১০ হাজার লিরা (৫৩১ মার্কিন ডলার) দিচ্ছি। এই সাহায্য অব্যাহত থাকবে।

এদিকে সিরিয়ায় সরকার-নিয়ন্ত্রিত ১ হাজার ২৫০ জনের প্রাণহানির কথা জানিয়েছে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রিত এলাকায় ১ হাজার ৪০০ জন ভূমিকম্পে নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে হোয়াইট হেলমেটস কর্তৃপক্ষ।

তুরস্ক সরকারের জরুরি বিভাগ সে দেশে ভূমিকম্পকে চতুর্থ মাত্রার দুর্যোগ হিসেবে শ্রেণীভূক্ত করেছে। এর অর্থ হলো, দেশটি ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে আন্তর্জাতিক সাহায্য চাইছে।

এর আগে তুরস্ক সরকার জরুরি উদ্ধার তৎপরতায় সাহায্যের জন্য ন্যাটো জোটের সাহায্য চেয়ে চিঠি দিয়েছে। তুর্কি সেনাবাহিনীর ৯ হাজার সদস্যর পাশাপাশি দেশটির জরুরি বিভাগের ১২ হাজার কর্মী উদ্ধার কার্যক্রমে নিয়োজিত রয়েছে। এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৭০টি দেশ তুরস্কে উদ্ধারকারী টিম ও জরুরি সাহায্য পাঠানোর প্রস্তাব দিয়েছে। প্রায় দুই ডজন দেশের প্রতিনিধিরা এরইমধ্যে উদ্ধার কার্যক্রমে যোগ দিয়েছে।

অন্যদিকে সিরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার কারণে সাহায্য ও উদ্ধার কার্যক্রমে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আশানুরূপ সাড়া মিলছে না বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। এখন পর্যন্ত রাশিয়া, ইরান, ইরাক, আলজেরিয়া, কিউবা ও মরক্কো সিরিয়া সরকারকে জরুরি ত্রাণ সহায়তা পাঠিয়েছে। উত্তর কোরিয়া সরকার তাদের পাঁচটি বিমান সিরিয়া সরকারের সাহায্যার্থে পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছে।

রাশিয়া ও ইরান থেকে সাহায্যবোঝাই কমপক্ষে তিনটি করে বিমান সিরিয়ার সরকার নিয়ন্ত্রিত অংশে পৌঁছেছে। রুশ সেনাবাহিনীর ৩০০ সদস্য ও ৬০টি ভারী যন্ত্র ভূমিকম্পের দিন থেকে উদ্ধার কার্যক্রমে যোগ দিয়েছে। এছাড়া সিরিয়ার বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রিত অংশে ইসরায়েলসহ বেশকিছু দেশ এরইমধ্যে জরুরি সাহায্য পাঠিয়েছে।