সেনাবাহিনী নিয়ে চরম বিপাকে জেলেনস্কি

বিশ্বের অন্যতম পরাশক্তি রাশিয়ার সঙ্গে ইউক্রেনের যুদ্ধ চলছে প্রায় দেড় বছর ধরে। তবে যে সেনাবাহিনীর ওপর ভিত্তি করে রাশিয়াকে প্রতিরোধ করছে দেশটি সেই সেনাবাহিনীর অভ্যন্তরে বিদ্যমান দুর্নীতি নিয়ে মহা বিপাকে পড়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। খবর রয়টার্স।

ক্ষিপ্ত জেলেনস্কি

বিশেষ করে সেনা নিয়োগ কর্তৃপক্ষের ব্যাপক দুর্নীতিতে ব্যাপক ক্ষিপ্ত হয়েছেন জেলেনস্কি। এই কর্তৃপক্ষ সেনা নিয়োগে ব্যাপক দুর্নীতি করেছে। সেনাদের যুদ্ধে না পাঠিয়ে নিজেদের বাড়ি তৈরির কাজে ব্যবহার করেছে। আবার দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অর্থ দিয়ে গাড়ি-বাড়ি কিনেছে এমনকি বিদেশেও সম্পদ গড়েছে।

জানা গেছে, সম্প্রতি সেনা নিয়োগের দপ্তরগুলোতে অডিট করা হয়। সেই অডিট থেকেই এসব দুর্নীতির ছবি সামনে আসে। সেখানে দেখা গেছে, সেনা কর্মকর্তারা টাকার বিনিময়ে লোকজনকে যুদ্ধের অযোগ্য সার্টিফিকেট দিচ্ছেন, যার ফলে ওইসব লোক যুদ্ধে যাওয়া থেকে বেঁচে যাচ্ছে। আবার অনেকক্ষেত্রে অযোগ্য, অদক্ষ লোকদের যুদ্ধের ফ্রন্টলাইনে পাঠিয়ে দিচ্ছেন।

সেনাদের সাথে বৈঠকে জেলেনস্কি

কেউ কেউ সৈন্যদের যুদ্ধে না পাঠিয়ে তাদেরকে দিয়ে নিজেদের বাড়ি তৈরির কাজে লাগাচ্ছেন। আবার একজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া গেছে, তিনি এসব দুর্নীতির মাধ্যমে প্রাপ্ত অর্থ দিয়ে পরিবারের সদস্যদের নামে বিলাসবহুল বাড়ি-গাড়ি কিনছেন। স্পেনেও তিনি বাড়ি কিনেছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।

এসব অভিযোগে সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ১১২টি ফৌজদারি মামলা করা হয়েছে। এসব অভিযোগে এরইমধ্যে অনেক অফিসারকে বরখাস্ত করা হয়েছে। জেলেনস্কি বলেছেন, অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হবে। যারা নিজেদের নির্দোষ করে দাবি করছেন, তাদেরকে সেটি প্রমাণ করতে হবে। তারপর তাদেরকে ফ্রন্টলাইনে যুদ্ধে যোগ দিতে হবে।

এর আগেও সেনাবাহিনীসহ বেশি কিছু সেক্টরে দুর্নীতি বিরোধী অভিযান চালিয়েছিলেন জেলেনস্কি। যুদ্ধ চলাকালেও দেশের মধ্যে এমন দুর্নীতি তাকে হতাশ করেছে। অন্যদিকে যেসব আন্তর্জাতিক সংস্থাতে ইউক্রেন যোগ দিতে চাইছে, সেসব ক্ষেত্রে দুর্নীতিমুক্ত হওয়ার শর্ত রয়েছে। ফলে না চাইলেও যুদ্ধের মধ্যেই দুর্নীতিবিরোধী এসব অভিযান চালাতে হচ্ছে। আর এসব অভিযানে যে ফল এসেছে তার জেলেনস্কির জন্য বেশ হতাশার।

একদিকে রাশিয়ার মতো পরাশক্তির বিরুদ্ধে প্রতিনিয়ত সেনা সদস্যের পরিমাণ কমছে। অন্যদিকে দুর্নীতির কারণে অনেককে বাদ দিতে হচ্ছে। এছাড়া অস্ত্র সংকটসহ নানা কারণে সেনাবাহিনী নিয়ে বড় সংকটে পড়ে গেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট।