ফিলিস্তিনিদের নিয়ে ‘বিরূপ মন্তব্য’ মুছে ফেলতে বাধ্য হলো ইসরায়েলি দূতাবাস

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফেসবুকে ফিলিস্তিনিদের নিয়ে করা ‘অসংবেদনশীল’ মন্তব্য সরিয়ে ফেলতে ইসরায়েলি দূতাবাসকে বাধ্য করেছে সিঙ্গাপুর কর্তৃপক্ষ। তারা বলছে, বিষয়টি উত্তেজনা সৃষ্টি করতে পারে বলে মনে করায় তারা এই পদক্ষেপ নিয়েছেন। সিঙ্গাপুরের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সোমবার (২৫ মার্চ) এ তথ্য জানান। খবর মিডলইস্টমনিটর।

বিতর্কিত ওই পোস্ট ও সিঙ্গাপুরের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কে শানমুগাম

ফেসবুকের ওই পোস্টে ইসরায়েলি দূতাবাস বলেছিল, মুসলমানদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ আল কোরআনে ৪৩ বার ইসরায়েলের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু ফিলিস্তিনিরা যে স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্রের দাবি করেন, সেই ফিলিস্তিনের কথা কোরআনে একবারও উল্লেখ করা হয়নি।

সিঙ্গাপুরের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কে শানমুগাম বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইসরায়েল দূতাবাসের করা ওই পোস্টের বিষয়গুলো পুরোপুরি অগ্রহণযোগ্য। ওই মন্তব্য অসংবেদনশীল ও অযথার্থ। বিষয়টি জানার পর আমি মর্মাহত হয়েছিলাম।

সিঙ্গাপুরের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ধর্মীয় গ্রন্থকে রাজনৈতিক প্রেক্ষিতে ব্যবহার করা ভুল। বর্তমান পরিস্থিতিতে তা আরও খারাপ। এটি আমাদের নিরাপত্তা এবং সিঙ্গাপুরের সম্প্রীতি রক্ষার ক্ষেত্রে ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ এ ধরনের মন্তব্য উত্তেজনা সৃষ্টি এবং এখানে (সিঙ্গাপুরে) বসবাসকারী ইহুদি সম্প্রদায়ের লোকজনকেই ঝুঁকিতে ফেলতে পারে।

সিঙ্গাপুরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভিভিয়ান বালাকৃষানও এই পোস্টের নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, রাজনৈতিক পয়েন্ট তৈরি করার জন্য পবিত্র গ্রন্থগুলোর উল্লেখ করা অত্যন্ত অনুচিত। এর পরিপ্রেক্ষিতে ইসরায়েলি দূতাবাসকে এ পোস্টটি সরিয়ে ফেলতে বলা হয়। পরে ইসরায়েলি দূতাবাস দ্রুতই সেটি সরিয়ে ফেলে।

ইসরায়েল দূতাবাসের একজন মুখপাত্রের বরাত দিয়ে খবরে বলা হয়. প্রয়োজনীয় অনুমোদন ছাড়াই ফেসবুকে পোস্টটি করা হয়েছিল। এর জন্য দায়ী ব্যক্তিকে শাস্তিও দেওয়া হয়েছে। ওই মুখপাত্র বলেন, ইসরায়েল দূতাবাস সিঙ্গাপুরের ধর্ম ও জাতিগত সম্প্রীতিকে সম্মান করে।

উল্লেখ্য, কোরআনে ৪৩ বার ইসরায়েল শব্দ উল্লেখ করা হলেও সেটি বর্তমানের ইসরায়েল রাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কিত নয়। বরং নবি ইয়াকুবের বংশধর, যিনি ইসরায়েল নামেও পরিচিত ছিলেন, তার ও তার সন্তানদের ক্ষেত্রে শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে। অন্যদিকে ফিলিস্তিন শব্দটি কোরআনে স্পষ্টভাবে উল্লেখ না করা হলেও মিরাজসহ অনেক ঘটনায় পরোক্ষভাবে ফিলিস্তিনের কথা উল্লেখ রয়েছে।