কুয়েতের আমিরকে অপমান: সাবেক এমপির ৪ বছরের কারাদণ্ড

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কুয়েতের আমির শেখ মেশাল আল-আহমদ আল-জাবের আল-সাবাহকে অপমান করার অভিযোগে সাবেক সংসদ সদস্য ওয়ালিদ আল-তাবাতাবাইকে চার বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট।

কুয়েতের সাবেক সংসদ সদস্য ওয়ালিদ আল-তাবাতাবাই

স্পষ্টবাদী রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির জন্য পরিচিত আল-তাবাতাবাই সম্প্রতি কুয়েতের আমিরের সংবিধান সংশোধন এবং জাতীয় পরিষদ (পার্লামেন্ট) ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট দেন। এরপরই তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়।

প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে আমির শেখ মেশাল দেশটির সংসদ ভেঙে দেন এবং সংবিধানের কয়েকটি ধারা স্থগিত করেন। সরকারি ভাষ্যমতে, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধারের জন্য এই পদক্ষেপ জরুরি ছিল। তবে সমালোচকরা এটিকে ক্ষমতা কুক্ষিগত করার এবং বিরোধী মত দমনের প্রচেষ্টা হিসেবে দেখছেন।

আল-তাবাতাবাইয়ের অনলাইন কার্যকলাপ তদন্তের পর প্রসিকিউটররা তার বিরুদ্ধে আমিরের কর্তৃত্ব ক্ষুণ্ন করা এবং ভুল তথ্য ছড়ানোর অভিযোগ আনেন। আল-তাবাতাবাই তার মন্তব্যকে বাকস্বাধীনতার চর্চা বলে দাবি করলেও আদালত最终 রায় দেন যে, তিনি আমিরের মর্যাদা ও কর্তৃত্ব রক্ষাকারী আইন লঙ্ঘন করেছেন।

কুয়েতে রাজনৈতিক ভিন্নমত পোষণকারীদের ওপর ক্রমবর্ধমান দমন-পীড়নের মধ্যেই আল-তাবাতাবাইকে দোষী সাব্যস্ত করার ঘটনা ঘটল। সরকার বা তার আঞ্চলিক মিত্রদের বিরোধিতা করার জন্য ইতোমধ্যেই বেশ কয়েকজন ব্যক্তি বিচারের মুখোমুখি হয়েছেন বা কারাদণ্ড ভোগ করেছেন। মানবাধিকার সংস্থাগুলো এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছে, আল-তাবাতাবাইয়ের এই সাজা কুয়েতে মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং রাজনৈতিক অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে একটি উদ্বেগজনক নজির স্থাপন করলো।

উল্লেখ্য, একই ধরনের একটি ঘটনায় চলতি বছরের জানুয়ারিতে কুয়েতের বিরোধী দলীয় নেতা সালমান আল-খালিদিকে ইরাক থেকে প্রত্যর্পণ নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছিল। আমির এবং শাসক পরিবারের সমালোচনাকারী আল-খালিদিকে ইরাক ভ্রমণের সময় আটক করে কুয়েতে ফিরিয়ে আনা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। মানবাধিকার কর্মীরা এই প্রত্যর্পণকে আন্তর্জাতিক আইন এবং ইন্টারপোলের সংবিধানের লঙ্ঘন বলে নিন্দা জানিয়েছেন।

সূত্র: দ্য নিউ আরব