শুল্কযুদ্ধ নিয়ে সংলাপে বসতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র ও চীন

বিশ্বের দুই বৃহত্তম অর্থনীতি যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে চলমান শুল্কযুদ্ধের উত্তেজনা কমাতে চলতি সপ্তাহেই আলোচনা শুরু করতে যাচ্ছেন দেশদুটির কর্মকর্তারা। সুইজারল্যান্ডে মার্কিন ও চীনা কর্মকর্তাদের মধ্যে এ সংলাপ হবে। খবর বিবিসির।

বাণিজ্য বিষয়ে বৈঠকে বসতে যাচ্ছে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আগামী ৯ থেকে ১২ মে সুইজারল্যান্ডে অনুষ্ঠিতব্য আলোচনায় যোগ দেবেন চীনের উপ-প্রধানমন্ত্রী হি লাইফেং।

অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য দপ্তর জানিয়েছে, মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট এবং মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি (ইউএসটিআর) জেমিসন গ্রিয়ার বৈঠকে ওয়াশিংটনের প্রতিনিধিত্ব করবেন।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে হোয়াইট হাউসে ফিরে আসার পর চীন থেকে আমদানি পণ্যের ওপর ১৪৫% পর্যন্ত কর আরোপ করেছেন। পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসা কিছু পণ্যের ওপর ১২৫% শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছে চীন। আর এতেই শুরু হয় দুই দেশের শুল্কযুদ্ধ।

ট্রাম্প গত এপ্রিলের শুরুতে চীনসহ বিশ্বের অন্তত ১০০টি দেশের ওপর বিভিন্ন হারে অতিরিক্ত শুল্কারোপের ঘোষণা দেন। ট্রাম্পের এই শুল্কযুদ্ধ নিয়ে বিশ্বজুড়ে অর্থনীতিতে উদ্বেগ ও অস্থিরতা দেখা দেয়। শেষপর্যন্ত অন্যান্য দেশের ওপর নতুন শুল্কারোপ তিন মাসের জন্য স্থগিত করলেও ট্রাম্প চীনের ওপর শুল্ক আরও বাড়িয়ে দেন।

মার্কিন অর্থমন্ত্রী বেসেন্ট জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থার ভারসাম্য রক্ষার জন্য উন্মুখ, যাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ আরও ভালোভাবে পূরণ করা যায়।

সুইজারল্যান্ডে বৈঠক সম্পর্কে ফক্স নিউজের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে মার্কিন অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, আমার ধারণা হলো এটি উত্তেজনা হ্রাসের বিষয়ে হবে, বড় বাণিজ্য চুক্তির বিষয়ে নয়, তবে এগিয়ে যাওয়ার আগে আমাদের উত্তেজনা হ্রাস করতে হবে।

বুধবার সকালে চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি আলোচনার মাধ্যমে সমস্যাটি সমাধান করতে চায়, তাহলে তাদের নিজেদের এবং বিশ্বের ওপর একতরফা শুল্ক আরোপের গুরুতর নেতিবাচক প্রভাব মোকাবেলা করতে হবে।

চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, বেইজিং দেশের স্বার্থ, বিশ্বের প্রত্যাশা এবং আমেরিকান ব্যবসার আবেদন সম্পূর্ণরূপে বিবেচনা করার পরই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যোগাযোগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

বেইজিং বলেছে, চীন আলোচনার জন্য উন্মুখ, তবে যুক্তরাষ্ট্র যদি এই বাণিজ্য যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় - তবে তারাও শেষ পর্যন্ত লড়াই করবে।

এদিকে দুই দেশের মধ্যে সংলাপের আয়োজন হলেও বিশ্ব বাণিজ্য বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন, খুবই শিগগিরই বেশি কিছু আশা করা ঠিক হবে না। এই আলোচনার ফল পেতে কয়েক মাস সময় লাগবে।

হিনরিচ ফাউন্ডেশনের বাণিজ্য নীতি প্রধান ডেবোরা এলমস বলেন, আমি বলছি না যে এটি লাভজনক নয়, কিন্তু আপনাকে তো কোথাও থেকে শুরু করতে হবে। আলোচনা বেশ কয়েক মাস বা এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চলতে পারে।