পশ্চিম তীরে উত্তাপ ছড়াচ্ছে ইসরায়েলের নতুন পরিকল্পনা

অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে নতুন করে ২২টি বসতি স্থাপনের সিদ্ধান্তের একদিন পরই ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ পশ্চিম তীরে একটি ‘ইহুদি ইসরায়েলি রাষ্ট্র’ গড়ে তোলার ঘোষণা দিয়েছেন। তার এই ঘোষণায় আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তীব্র সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।

পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বসতি ও ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ

শুক্রবার (৩০ মে) পশ্চিম তীরের উত্তরাঞ্চলের সা-নুর বসতি এলাকা পরিদর্শনের সময় ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ এই বিতর্কিত মন্তব্য করেন। আরব নিউজের খবরে বলা হয়েছে, ২০০৫ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল শ্যারনের গাজা থেকে সৈন্য প্রত্যাহারের নীতির অংশ হিসেবে সা-নুর বসতি খালি করা হয়েছিল।

কাটজ তার বক্তব্যে বলেন, ‘এই সিদ্ধান্ত সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর প্রতি একটি কঠোর জবাব, যারা আমাদের এই ভূমিতে অধিকার দুর্বল করতে চায়। এটি ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ও তার সহযোগীদের জন্যও স্পষ্ট বার্তা, তারা কাগজে-কলমে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিতে পারেন, কিন্তু আমরা সে মাটিতে ইহুদি রাষ্ট্র গড়ে তুলব।’

তিনি আরও যোগ করেন, ‘তাদের কাগজের স্বীকৃতি ইতিহাসের ডাস্টবিনে নিক্ষিপ্ত হবে, আর ইসরায়েল রাষ্ট্র উন্নতির পথে এগিয়ে যাবে।’

উল্লেখ্য, ইসরায়েল ১৯৬৭ সাল থেকে পশ্চিম তীর দখল করে রেখেছে। আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী জাতিসংঘসহ বিশ্ব সম্প্রদায় সেখানে ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকে অবৈধ হিসেবে গণ্য করে। বৃহস্পতিবার ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের এই নতুন বসতি স্থাপনের ঘোষণার পরই বিভিন্ন দেশ তীব্র সমালোচনা শুরু করে।

ব্রিটেন এই পদক্ষেপকে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পথে ‘ইচ্ছাকৃত বাধা’ বলে অভিহিত করেছে। অন্যদিকে, জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের মুখপাত্র বলেছেন, এই পদক্ষেপ দুই-রাষ্ট্র সমাধানের প্রচেষ্টাকে ‘ভুল পথে’ নিয়ে যাচ্ছে।

এ বিষয়ে ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ সিঙ্গাপুর সফরকালে বলেন, শর্তসাপেক্ষে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি ‘নৈতিক দায়িত্ব ও রাজনৈতিক অপরিহার্যতা।’ তিনি এর আগে জানিয়েছিলেন, জুন মাসে ফ্রান্স ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিতে পারে।

ইসরায়েল-ফিলিস্তিন দ্বন্দ্বের সমাধানে দুই রাষ্ট্রের ধারণা পুনরুজ্জীবিত করতে জুন মাসে জাতিসংঘের নিউইয়র্ক সদর দপ্তরে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। প্যারিসের এক কূটনীতিকের মতে, এই সম্মেলন আরও কিছু দেশকে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র স্বীকৃতি দেওয়ার পথ প্রশস্ত করবে।