ভারতের বিরুদ্ধে ‘প্রক্সি সন্ত্রাস’ চালানোর অভিযোগ শাহবাজের, সব ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করার হুঁশিয়ারি

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ অভিযোগ করেছেন, ‘মার্কায়ে হক’ অভিযানে পরাজয়ের জেরে ভারত পাকিস্তানে ‘প্রক্সি সন্ত্রাস’ তীব্রতর করেছে। শনিবার (৩১ মে) কোয়েটার কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজে স্নাতক কর্মকর্তাদের উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে তিনি এই মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘ভারত ‘ফিতনায়ে হিন্দুস্তান’-এর মাধ্যমে পরোক্ষ আগ্রাসনের পথ বেছে নিয়েছে। তবে পাকিস্তান সব ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করে দেবে।’

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ

শাহবাজ শরিফ আরও বলেন, ‘ভারতের সাম্প্রতিক হামলার জবাবে ‘অপারেশন বুনিয়ানুম মারসুস’ অভিযানে শত্রুপক্ষের (ভারতের) বিমানঘাঁটি, গোলাবারুদ ডিপো ও ক্ষেপণাস্ত্র ঘাঁটিতে নির্ভুল ও সফল হামলা চালায় পাকিস্তান। ৭ থেকে ১০ মে পর্যন্ত চলা এই সামরিক অভিযান ছিল মার্কায়ে হক অভিযানেরই অংশ।’

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, ‘পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ও জাতি একত্রিত হয়ে দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করবে। আমাদের বিশ্বাস, দৃঢ়তা ও শক্তি দিয়ে আমরা ভারত ও তার দোসরদের সকল ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করে দেব।’ তিনি ‘বুনিয়ানুম মারসুস’ অভিযানে সেনাবাহিনীর বীরত্বপূর্ণ ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং তাদের এই কার্যক্রমকে জাতীয় গর্বের উৎস হিসেবে অভিহিত করেন। শাহবাজ শরিফ আশ্বাস দেন, ‘সরকার সংবিধান রক্ষায় সশস্ত্র বাহিনীর পাশে রয়েছে।’ এ সময় অনুষ্ঠানে সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনিরও উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে প্রধানমন্ত্রী কোয়েটায় ঐতিহাসিক বেলুচিস্তান গ্র্যান্ড ট্রাইব্যাল জিরগায় অংশ নিয়ে প্রদেশের নিরাপত্তা ও উন্নয়ন সম্পর্কিত বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি বেলুচিস্তানকে ‘পাকিস্তানের হৃদয়’ আখ্যা দিয়ে বলেন, ‘যুদ্ধের সময় বেলুচিস্তানসহ দেশের সব প্রদেশ একযোগে সেনাবাহিনীর পাশে দাঁড়িয়েছে।’

প্রধানমন্ত্রী সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল সৈয়দ আসিম মুনিরের নেতৃত্বের প্রশংসা করে সাম্প্রতিক সংঘর্ষকে ‘১৯৭১ সালের প্রতিশোধ’ হিসেবেও উল্লেখ করেন। এই প্রসঙ্গে তিনি ১৯৯৮ সালে ভারতের পরমাণু পরীক্ষার জবাবে পাকিস্তানের সফল পারমাণবিক পরীক্ষার কথাও স্মরণ করিয়ে দেন। তিনি বলেন, ‘ভারতের পাঁচটি পারমাণবিক পরীক্ষার জবাবে আমরা ছয়টি পরীক্ষা করেছিলাম। এটা ছিল আমাদের জন্য এক গৌরবের মুহূর্ত।’

বেলুচিস্তানের ঐতিহ্যবাহী নেতৃত্বের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে শাহবাজ শরিফ বলেন, ‘কায়েদে আজমের নেতৃত্ব মেনে নিয়ে এ অঞ্চলের মানুষ সর্বপ্রথম পাকিস্তানের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করেছিল।’ তিনি বিদেশি মদদপুষ্ট সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়ার পাশাপাশি সংলাপের মাধ্যমে অভিযোগ সমাধানেরও আহ্বান জানান।