তিন যুগের মাথায় দুই সন্তান নীতি ত্যাগ করল ভিয়েতনাম

জন্মহার অতিরিক্ত মাত্রায় কমে গেছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ ভিয়েতনামে। বেড়ে গেছে বয়স্ক মানুষের সংখ্যা। এমন পরিস্থিতিতে জনসংখ্যার ক্রমহ্রাস হার রোধ ও সমাজে বয়স্ক মানুষের চাপ কমানোর লক্ষ্যে দীর্ঘদিনের দুই সন্তান নীতি বাতিল করেছে দেশটি। খবর বিবিসির।

মোটরবাইকে ভিয়েতনামের একটি পুরো পরিবার

ভিয়েতনামে ২০২৪ সালে জন্মহার প্রতি নারীতে রেকর্ড সর্বনিম্ন ১.৯১ শিশুতে পৌঁছেছে। ১৯৯৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ভিয়েতনামের জন্মহার ছিল প্রতি নারীতে প্রায় ২.১ শিশু।

জনসংখ্যার এই ক্রমহ্রাসমান জন্মহার গ্রামের চেয়ে শহরাঞ্চলে বেশি। এছাড়া সমাজে বয়স্ক মানুষের সংখ্যাও গেছে বেড়ে।

শুধু তাই নয়, ক্রমহ্রাসমান জন্মহারের কারণে ভিয়েতনামে বিভিন্ন অঞ্চল এবং সামাজিক গোষ্ঠীতে জনসংখ্যায় উল্লেখযোগ্য ভারসাম্যহীনতার সৃষ্টি হচ্ছে।

ভিয়েতনামের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ক্রমহ্রাসমান জন্মহার ঠেকাতে এবং সমাজে বয়স্ক শ্রেণির চাপ কমানোর লক্ষ্যে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা দুই সন্তান নীতি বাতিল করা হয়েছে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী দাও হং ল্যান বলেন, ক্রমহ্রাসমান জনসংখ্যা ভবিষ্যতের ভিয়েতনামের টেকসই অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদে জাতীয় নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষার জন্য হুমকিস্বরূপ।

ভিয়েতনামের গণমাধ্যম জানিয়েছে, চলতি সপ্তাহের শুরুতে সমস্ত বিধিনিষেধ তুলে নেওয়া হয়েছে এবং দম্পতিরা এখন থেকে তাদের পছন্দমতো সন্তান ধারণ করতে পারবেন।

তাইওয়ানের মতো প্রতিবেশি দেশ জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, সিঙ্গাপুর এবং হংকংয়েরও জন্মহার হ্রাস পাচ্ছে, তবে তাদের অর্থনীতি ভিয়েতনামের তুলনায় অনেক উন্নত।

ভিয়েতনামের কমিউনিস্ট সরকার ১৯৮৮ সালে দেশে দুই সন্তান নীতি চালু করেছিল। এই নীতি নীতি সবচেয়ে কঠোরভাবে কমিউনিস্ট পার্টির সদস্যদের উপর প্রয়োগ করা হয়েছিল।

দেশটি মূলত পরিকল্পিত অর্থনীতি থেকে বাজার অর্থনীতিতে রূপান্তরিত হওয়ার জন্য পর্যাপ্ত সম্পদ নিশ্চিত করতেই এ নীতি গ্রহণ করেছিল। তাছাড়া সেসময় কয়েক দশক ধরে যুদ্ধের প্রভাব কাটিয়ে উঠছিল দেশটি।