অভিবাসন ইস্যুতে উত্তপ্ত যুক্তরাষ্ট্র, লস অ্যাঞ্জেলেসে নামছে মেরিন সেনা

যুক্তরাষ্ট্রের ট্রাম্প প্রশাসন সোমবার (৯ জুন) লস অ্যাঞ্জেলেসে ইউএস মেরিন সেনা মোতায়েন করেছে এবং অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে ধরপাকড় আরও জোরদার করার ঘোষণা দিয়েছে। এ সিদ্ধান্তে দেশজুড়ে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে, বিশেষ করে ডেমোক্র্যাট নেতাদের মধ্যে যারা বিষয়টিকে জাতীয় সংকট হিসেবে বর্ণনা করেছেন। খবর রয়টার্স।

লস অ্যাঞ্জেলেসে নামছে মেরিন সেনা

দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ায় অবস্থিত ঘাঁটি থেকে প্রায় ৭০০ মেরিন সেনা সোমবার রাত বা মঙ্গলবার সকালে লস অ্যাঞ্জেলেসে পৌঁছানোর কথা রয়েছে। তাদের এই মোতায়েন অস্থায়ী ভিত্তিতে, যতক্ষণ না পর্যন্ত চার হাজার ন্যাশনাল গার্ড সদস্য পুরোপুরি মোতায়েন হয়।

এ ধরণের সামরিক মোতায়েন রাজ্য ও স্থানীয় নেতাদের অনুরোধ ছাড়াই করা হয়েছে, যা যুক্তরাষ্ট্রে অসাধারণ ঘটনা। অনেক বিশ্লেষক একে পুলিশের সহায়তায় সেনাবাহিনী ব্যবহারের বিরল দৃষ্টান্ত হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

হোমল্যান্ড সিকিউরিটি সেক্রেটারি ক্রিস্টি নোম জানান, অভিবাসী আইন লঙ্ঘনের দায়ে আরও কঠোরভাবে অভিযান চালানো হবে। ইতিমধ্যেই প্রতিদিন গড়ে দুই হাজার ব্যক্তিকে আটক করা হচ্ছে, যা আগের বাইডেন প্রশাসনের সময়কার দৈনিক গড় ৩১১ জনের তুলনায় বহুগুণ বেশি।

সোমবার ছিল টানা চতুর্থ দিন বিক্ষোভের। লস অ্যাঞ্জেলেসের একটি ফেডারেল ডিটেনশন সেন্টারের সামনে শত শত বিক্ষোভকারী জড়ো হন। পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করতে ‘কম প্রাণঘাতী’ অস্ত্র, যেমন টিয়ার গ্যাস ও ফ্ল্যাশ গ্রেনেড ব্যবহার করে।

অস্টিন, নিউ ইয়র্ক, ফিলাডেলফিয়া, সান ফ্রান্সিসকোসহ অন্তত নয়টি শহরে প্রতিবাদ ছড়িয়ে পড়েছে। বিক্ষোভকারীরা মেক্সিকো ও মধ্য আমেরিকার পতাকা উড়িয়ে “ফ্রি দেম অল” স্লোগান দেন।

ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউসাম সেনা মোতায়েনকে ‘স্বৈরতান্ত্রিক মনোভাবের স্পষ্ট ইঙ্গিত’ বলে বর্ণনা করেছেন এবং আদালতে অভিযোগ করেছেন যে ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ রাজ্য সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করে।

ট্রাম্প পাল্টা হুমকিতে বলেন, নিউসাম অভিবাসন আইনের প্রয়োগে বাধা দিচ্ছেন এবং তার সীমান্ত উপদেষ্টা টম হোম্যানের প্রস্তাব অনুযায়ী গভর্নরকে গ্রেপ্তার করা উচিত।

সেনেটের সশস্ত্র বাহিনী বিষয়ক কমিটির শীর্ষ ডেমোক্র্যাট সিনেটর জ্যাক রিড বলেন, একজন প্রেসিডেন্ট যেভাবে নিজের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে সেনাবাহিনীকে ব্যবহার করছেন, তা আমাদের গণতন্ত্রের জন্য গভীর হুমকি।

লস অ্যাঞ্জেলেসের মেয়র কারেন ব্যাস বলেন, এটি অভিবাসীদের শহর। এখানে আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে সামরিক শক্তি ব্যবহার অগ্রহণযোগ্য।

তবে সেক্রেটারি নোম কড়া ভাষায় বলেন, ওটা অভিবাসীদের শহর নয়, ওটা অপরাধীদের শহর।