ইসরায়েলি দুই মন্ত্রীর ওপর যুক্তরাজ্যের নিষেধাজ্ঞা

ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে সহিংসতায় উসকানি দেওয়ার অভিযোগে ইসরায়েলের কট্টরপন্থী দুই প্রভাবশালী মন্ত্রীর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাজ্য। মঙ্গলবার যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র দপ্তর এ ঘোষণা দেয়। প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার বুধবার হাউস অফ কমন্সে এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে বলেন, ‘মানবাধিকার সমুন্নত রাখা এবং দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের সম্ভাবনাকে রক্ষা করার লক্ষ্যে’ এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

ইতামার বেন-গভির এবং বেজালেল স্মোট্রিচ

নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসা দুই মন্ত্রী হলেন—ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী ইতামার বেন-গভির এবং অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচ। এই নিষেধাজ্ঞার ফলে তাদের যুক্তরাজ্যে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা এবং সে দেশে থাকা তাদের সব সম্পদ জব্দ করা হবে। পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে সহিংসতা বৃদ্ধিতে উসকানি দেওয়ার অভিযোগে অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, নিউজিল্যান্ড ও নরওয়ের সঙ্গে সমন্বয় করে যুক্তরাজ্য এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

লিবারেল ডেমোক্র্যাট দলের নেতা এড ডেভি সরকারের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ‘বেন-গভির এবং স্মোট্রিচের উসকানিতে পশ্চিম তীরে নিরীহ ফিলিস্তিনিদের ওপর বসতি স্থাপনকারীদের সহিংসতা অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছেছে।’

সাপ্তাহিক ‘প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্নোত্তর’ পর্বে কিয়ার স্টারমার আরও বলেন, তার সরকার গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠা, সব জিম্মির মুক্তি এবং মানবিক সহায়তার প্রবেশ নিশ্চিত করার সব ধরনের প্রচেষ্টাকে সমর্থন দিয়ে যাবে।

গাজার মানবিক পরিস্থিতিকে ‘ভয়াবহ ও উদ্বেগজনক’ আখ্যা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সহায়তা বিতরণ কেন্দ্রের বাইরের দৃশ্যগুলো সত্যিই হৃদয়বিদারক।" তিনি গাজায় দ্রুত ও বিপুল পরিমাণে সহায়তা পাঠানোর ওপর জোর দিয়ে বলেন, ‘ইসরায়েলের সহায়তা বিতরণের পরিকল্পনা অপর্যাপ্ত। জাতিসংঘ এবং অন্যান্য সংস্থাগুলোকে তাদের প্রতিষ্ঠিত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এই সহায়তা পৌঁছে দিতে হবে এবং ইসরায়েলকে অবশ্যই এর অনুমতি দিতে হবে।’

উল্লেখ্য, ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বাহিনী ও বসতি স্থাপনকারীদের হামলায় অন্তত ৯৭৪ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৭,০০০ জনের বেশি আহত হয়েছেন। গত জুলাই মাসে আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে) ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরায়েলি দখলদারিত্বকে অবৈধ ঘোষণা করে এবং সকল বসতি সরিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানায়।

উত্তর আয়ারল্যান্ডের সহিংসতার তীব্র নিন্দা

এদিকে, উত্তর আয়ারল্যান্ডের ব্যালিমেনা শহরসহ অন্যান্য অংশে রাতভর চলা দাঙ্গা ও বিশৃঙ্খলার তীব্র নিন্দা করেছেন প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার। তিনি বলেন, ‘পুলিশ সার্ভিস অফ নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডকে (পিএসএনআই) মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং শান্তি ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় সময় ও সুযোগ দেওয়া উচিত।’

পিএসএনআই জানিয়েছে, ব্যালিমেনায় টানা দ্বিতীয় রাতের দাঙ্গায় অন্তত ১৭ জন পুলিশ কর্মকর্তা আহত এবং ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর আগের রাতেও সহিংসতায় ১৫ জন কর্মকর্তা আহত হয়েছিলেন। কাউন্টি অ্যান্ট্রিমে এক কিশোরীকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগে ১৪ বছর বয়সী দুই কিশোরকে আদালতে হাজির করার পর এই অস্থিরতা শুরু হয়।