ভয়াবহ রুশ হামলার পর ট্রাম্পের দ্বারস্থ জেলেনস্কি

ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এযাবৎকালের সবচেয়ে বড় ও বিধ্বংসী বিমান হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। এই হামলার পর ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা মিত্রদের কাছে জরুরি ভিত্তিতে সহায়তা চেয়েছেন। তিনি বলেছেন, এই যুদ্ধ থামাতে হলে আগ্রাসনের হোতাদের ওপর চাপ বাড়ানোর পাশাপাশি নিজেদের প্রতিরক্ষাব্যবস্থা শক্তিশালী করা ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই।

সম্প্রতি জেলেনস্কি ও ট্রাম্প এক বৈঠকে মিলিত হন

ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, শনিবার রাতে চালানো এই হামলায় রাশিয়া ৪৭৭টি ড্রোন ও ৬০টি ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে। এতে অন্তত ১২ জন আহত হয়েছেন। এই হামলায় ইউক্রেনের একজন এফ-১৬ যুদ্ধবিমান চালকও নিহত হয়েছেন।

হামলার পর দেওয়া এক আবেগঘন বার্তায় প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলেন, “এই যুদ্ধের অবসান হওয়া উচিত। তাই আগ্রাসীর ওপর চাপ প্রয়োগ এবং আমাদের প্রতিরক্ষা—দুটোই প্রয়োজন।” তিনি আরও বলেন, “রাশিয়া যতদিন ব্যাপক হামলা চালানোর সক্ষমতা রাখবে, ততদিন তারা থামবে না।”

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘এক্স’-এ দেওয়া এক পোস্টে তিনি লেখেন, “রুশ বাহিনী সাধারণ মানুষের জীবনধারণের জন্য প্রয়োজনীয় সবকিছুকে নিশানা করছে।” তিনি জানান, স্মিলা শহরের একটি আবাসিক ভবনেও হামলা হয়েছে, যেখানে একটি শিশু আহত হয়। নিহত এফ-১৬ চালক ম্যাক্সিম উস্তিমেঙ্কোর কথা স্মরণ করে জেলেনস্কি বলেন, তিনি শত্রুপক্ষের সাতটি বিমান ভূপাতিত করেছিলেন।

ইউক্রেনের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, রাশিয়ার এই হামলা যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে আরও সহায়তা পাওয়ার জরুরি প্রয়োজনীয়তাকেই সামনে এনেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এখন পর্যন্ত কিয়েভকে নতুন কোনো সামরিক সহায়তা প্যাকেজ অনুমোদন দেননি। তবে সম্প্রতি ন্যাটো শীর্ষ সম্মেলনে জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকের পর তিনি ইউক্রেনের অতিরিক্ত প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থার অনুরোধ বিবেচনা করার কথা জানিয়েছেন।

জেলেনস্কি বলেন, “ইউক্রেনের মানুষের জীবন রক্ষায় সবচেয়ে কার্যকর উপায় হলো আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। আমরা যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি এসব ব্যবস্থা কিনতে প্রস্তুত। আমরা নেতৃত্ব, রাজনৈতিক সদিচ্ছা এবং যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ ও অন্যান্য মিত্রদের সহায়তার ওপর আস্থা রাখি।”

উল্লেখ্য, গত বছর থেকে ইউক্রেন তিনটি এফ-১৬ যুদ্ধবিমান হারিয়েছে, যদিও কিয়েভ তাদের মোট এফ-১৬ বিমানের সংখ্যা প্রকাশ করেনি। জেলেনস্কি আরও জানান, শুধু গত সপ্তাহেই রাশিয়া ইউক্রেনে ১১৪টির বেশি ক্ষেপণাস্ত্র, ১ হাজার ২৭০টির বেশি ড্রোন এবং প্রায় ১ হাজার ১০০টি নিয়ন্ত্রিত বোমা নিক্ষেপ করেছে।

অন্যদিকে, রাশিয়ার রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত গণমাধ্যম দাবি করেছে, রুশ-অধিকৃত লুহানস্ক অঞ্চলে ইউক্রেনের ড্রোন হামলায় একজন নিহত হয়েছেন। অবশ্য, উভয় পক্ষই বেসামরিক নাগরিকদের ওপর হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।