ইউরোপীয় কমিশন: হামাস সাহায্য চুরি করছে, এমন প্রমাণ নেই

গাজা উপত্যকায় হামাসের বিরুদ্ধে মানবিক সহায়তা চুরির কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলে সাফ জানিয়েছে ইউরোপীয় কমিশন। সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে কমিশনের মুখপাত্র ইভা হ্রনসিরোভা এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

বেসামরিক নাগরিকদের জন্য পাঠানো সহায়তা হামাস অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছে কি না, এমন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘হামাস সাহায্য চুরি করছে, এমন কোনো তথ্যপ্রমাণ আমাদের কাছে নেই।’

তিনি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ মানবিক নীতির প্রতি ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) অঙ্গীকারের ওপর জোর দেন। গাজা ছিটমহলের মানবিক পরিস্থিতিকে তিনি ‘বিপর্যয়কর’ বলে আখ্যায়িত করেন। ইভা হ্রনসিরোভা বলেন, ‘গাজার পরিস্থিতি যে ভয়াবহ ও অত্যন্ত জটিল, তা আমরা গোপন করছি না। তবুও আমাদের একটি কার্যকর ব্যবস্থা রয়েছে। গাজায় সাহায্য পৌঁছানোর জন্য আমাদের অবকাঠামো আছে এবং এই ব্যবস্থাটি ব্যবহার করে সেখানকার ক্ষুধার্ত মানুষদের কাছে অবিলম্বে সাহায্য পৌঁছানো উচিত।’

তিনি আরও জানান, ইইউ গাজায় সহায়তা বিতরণের জন্য প্রতিষ্ঠিত আন্তর্জাতিক মানবিক সংস্থাগুলোর ওপরই নির্ভর করছে। তিনি বলেন, ‘আমরা গাজা হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশনের সঙ্গে সহযোগিতা করছি না। কারণ আমরা মনে করি, মানবিক সহায়তা কখনোই বেসরকারীকরণ, রাজনীতিকরণ বা সংঘাতের হাতিয়ার হতে পারে না।’

ইউরোপীয় কমিশন তার সহযোগী মানবিক সংস্থাগুলোকে গাজায় প্রবেশের সুযোগ দেওয়ার জন্য ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান অব্যাহত রেখেছে।

উল্লেখ্য, ‘গাজা হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশন’ একটি বহুল বিতর্কিত ইসরায়েল-সমর্থিত মার্কিন সংস্থা। গত ২৭ মে থেকে এটি গাজা উপত্যকায় ত্রাণ বিতরণের কাজ করছে। জাতিসংঘের কর্মকর্তাদের মতে, এই ত্রাণ বিতরণের সময় গত দুই মাসে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর গুলিতে ত্রাণপ্রার্থী শতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

এদিকে ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য জাতিসংঘের সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ, অক্সফাম, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এবং ডক্টরস উইদাউট বর্ডারসসহ (এমএসএফ) ১৭০টিরও বেশি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা (এনজিও) এক যৌথ বিবৃতিতে তথাকথিত ‘গাজা হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশন’-এর বিতরণ প্রকল্প বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছে। একই সঙ্গে তারা জাতিসংঘের নেতৃত্বে ত্রাণ বিতরণ ব্যবস্থা পুনরায় চালুর অনুরোধ করেছে।

প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনে ৫৭ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। ইসরায়েলি বাহিনীর অবিরাম বোমাবর্ষণে পুরো ছিটমহলটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে এবং সেখানে দুর্ভিক্ষের মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

সূত্র: আনাদোলু এজেন্সি