২১ বিলিয়ন ইউরোর শুল্ক তালিকা প্রস্তুত: যুক্তরাষ্ট্রকে পাল্টা জবাবের হুঁশিয়ারি ইইউর

যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত নতুন শুল্কের জবাবে ২১ বিলিয়ন ইউরো (প্রায় ২৪ বিলিয়ন ডলার) মূল্যের পাল্টা শুল্ক আরোপের একটি তালিকা প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। কোনো চুক্তিতে পৌঁছানো সম্ভব না হলে এই পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ইতালির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্তোনিও তাজানি।

সোমবার ইতালির দৈনিক পত্রিকা ‘ইল মেসেজ্জারো’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তাজানি বলেন, “২১ বিলিয়ন ইউরোর একটি ইউরোপীয় শুল্ক তালিকা প্রস্তুত আছে এবং এর সঙ্গে দ্বিতীয় আরেকটি তালিকাও যুক্ত হতে পারে। আমি আত্মবিশ্বাসী যে এক্ষেত্রে অগ্রগতি হবে। শুল্ক সবার জন্যই ক্ষতিকর, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য।”

তিনি উল্লেখ করেন, শেয়ার বাজারের দরপতন ঘটলে তা মার্কিন নাগরিকদের অবসর ভাতা এবং সঞ্চয়কে ঝুঁকির মুখে ফেলবে। তিনি আরও বলেন, তাদের দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্য হলো যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, কানাডা ও মেক্সিকোর মধ্যে একটি উন্মুক্ত বাজার ব্যবস্থা তৈরি করা, যেখানে কোনো শুল্ক থাকবে না।

তাজানি বলেন, “আমার মূলমন্ত্র হলো দ্বৈত-শূন্য অর্জন করা: অর্থাৎ ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে কোনো শুল্ক থাকবে না। আমি জানি এটা সহজ নয়, তবে একযোগে আমাদের অর্থনীতিকে এগিয়ে নেওয়ার এটাই একমাত্র পথ।”

তিনি ইউরোপকে ‘মাথা উঁচু রেখে’ শান্ত ও সংযতভাবে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান। তিনি জোর দিয়ে বলেন, একটি বাণিজ্য যুদ্ধ এড়ানো ‘সবার স্বার্থেই’ জরুরি, কারণ “ইউরোপের যেমন আমেরিকাকে প্রয়োজন, তেমনি আমেরিকারও ইউরোপকে প্রয়োজন।”

এর আগে, শনিবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা দেন যে, যুক্তরাষ্ট্র আগামী ১ আগস্ট থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও মেক্সিকো থেকে আমদানিকৃত পণ্যের ওপর ৩০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবে। এই ঘোষণার ফলে যুক্তরাষ্ট্র ও ইইউর মধ্যে চলমান বাণিজ্য আলোচনা ঝুঁকির মুখে পড়েছে, কারণ চলতি মাসেই একটি ব্যাপকভিত্তিক বাণিজ্য চুক্তিতে পৌঁছানোর লক্ষ্য ছিল জোটটির।

ট্রুথ সোশ্যাল-এ দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্প ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লিয়েন এবং মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লদিয়া শেইনবামকে উদ্দেশ করে লেখা দুটি পৃথক চিঠি প্রকাশ করেন। চিঠিতে ইউরোপ ও মেক্সিকো থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আসা পণ্যের ওপর ৩০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেওয়া হয়।

এই ঘোষণার পর উরসুলা ভন ডার লিয়েন ১ আগস্টের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর জন্য কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেন। তবে তিনি ইইউর স্বার্থ রক্ষায় প্রয়োজনীয় সব ধরনের পদক্ষেপ নেওয়ার অঙ্গীকারও করেছেন, যার মধ্যে আনুপাতিক হারে পাল্টা ব্যবস্থা গ্রহণও অন্তর্ভুক্ত।