ইউএনআরডব্লিউএ অফিসের পানি-বিদ্যুৎ বন্ধ করে দিলো ইসরায়েল সরকার

ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের সহায়তাকারী জাতিসংঘের সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএর দপ্তরে পানি ও বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে ইসরায়েল। দেশটির জ্বালানি মন্ত্রী ইলি কোহেন এই ঘোষণা দিয়ে জানিয়েছেন, ইসরায়েলের অভ্যন্তরে সংস্থাটির সব ধরনের কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়াই এই পদক্ষেপের মূল উদ্দেশ্য।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) ইলি কোহেন ‘ইউএনআরডব্লিউএর বাতি নিভিয়ে দাও!’ স্লোগান দিয়ে লেখেন, ‘ইউএনআরডব্লিউএর দপ্তরে বিদ্যুৎ ও পানির সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার আইন জারি করা হয়েছে। এতে সংস্থাটির ইসরায়েলে সব কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাবে।’ তিনি দাবি করেন, এই সংস্থাটি হামাসের ‘সক্রিয় সহযোগী’ হিসেবে কাজ করেছে এবং এটি ‘উসকানি ও হত্যার প্রজননক্ষেত্রে’ পরিণত হয়েছে।

চলতি বছরের জানুয়ারির শেষে ইসরায়েল সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে ইউএনআরডব্লিউএর কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। এরপর সংস্থাটিকে পূর্ব জেরুজালেমের শেখ জাররাহ এলাকা থেকে তাদের প্রধান কার্যালয় ছাড়তে বাধ্য করা হয়। পরে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ জেরুজালেমে ইউএনআরডব্লিউএ পরিচালিত ছয়টি বিদ্যালয় বন্ধেরও নির্দেশ দেয়।

এরই ধারাবাহিকতায়, গত ২৮ অক্টোবর ইসরায়েলি সংসদ নেসেট ইউএনআরডব্লিউএর কার্যক্রম নিষিদ্ধ করতে দুটি আইন পাস করে। এর মাধ্যমে সংস্থাটির কূটনৈতিক সুবিধা ও দায়মুক্তি বাতিল করা হয় এবং এর সঙ্গে যেকোনো প্রাতিষ্ঠানিক যোগাযোগও নিষিদ্ধ করা হয়।

ইসরায়েলের অভিযোগ, ২০২৩ সালের শেষ দিকে হামাসের হামলায় ইউএনআরডব্লিউএর কয়েকজন কর্মী জড়িত ছিল। তবে জাতিসংঘ এই অভিযোগ দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করে জানিয়েছে, ইউএনআরডব্লিউএ সব সময় নিরপেক্ষতার নীতি মেনে চলে।

জাতিসংঘ আরও জানায়, ফিলিস্তিনে চলমান মানবিক বিপর্যয়ের মধ্যে ইউএনআরডব্লিউএ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক সহায়তাদানকারী সংস্থা। এটি লক্ষ লক্ষ মানুষের খাদ্য, চিকিৎসা ও আশ্রয়ের সংস্থান করে থাকে।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলের অব্যাহত হামলায় প্রায় ৫৮ হাজার ৫০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। এছাড়া ভয়াবহ ধ্বংসযজ্ঞ, তীব্র খাদ্য সংকট ও রোগবালাইয়ের কারণে সেখানকার পরিস্থিতি আরও শোচনীয় হয়ে উঠেছে। এমন অবস্থায় গাজাবাসী এখন পুরোপুরি মানবিক সাহায্যের ওপর নির্ভরশীল, যেখানে ইউএনআরডব্লিউএ-ই সবচেয়ে বড় সহায়তাকারী সংস্থা।