গাজার হাসপাতালে ইসরায়েলি হামলা: ‘পূর্ণাঙ্গ তদন্ত’ চায় জার্মানি

গাজা উপত্যকার আল-নাসের হাসপাতালে ইসরায়েলের প্রাণঘাতী হামলার ‘পূর্ণাঙ্গ তদন্তের’ দাবি জানিয়েছে জার্মানি। বুধবার বার্লিনে এক সংবাদ সম্মেলনে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মার্টিন গিজে এই দাবি জানান।

জার্মানি মনে করে, ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর দেওয়া প্রাথমিক প্রতিবেদন ‘যথেষ্ট নয়’। মার্টিন গিজে বলেন, ‘এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত শেষে প্রকৃত দোষীদের অবশ্যই চিহ্নিত করতে হবে। এই ঘটনার পারিপার্শ্বিকতা গুরুতর প্রশ্ন তৈরি করেছে, যার ব্যাখ্যা প্রয়োজন। এটি এমন অনেক ঘটনার মধ্যে একটি, যেগুলোর স্বচ্ছ তদন্ত হওয়া আবশ্যক, কিন্তু এখন পর্যন্ত পর্যাপ্তভাবে তদন্ত করা হয়নি।’

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ২৪০ জনের বেশি সাংবাদিক নিহত হওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে গিজে জানান, নিহত সাংবাদিকদের এই সংখ্যাটি ‘একেবারেই অসহনীয় পর্যায়ে’ পৌঁছেছে।

চিকিৎসকদের তথ্যমতে, সোমবার গাজাজুড়ে ইসরায়েলের নতুন হামলায় ছয় সাংবাদিকসহ অন্তত ৪৭ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং আরও অনেকে আহত হয়েছেন। ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় প্রাথমিকভাবে জানিয়েছিল, দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসের নাসের মেডিকেল কমপ্লেক্সে ইসরায়েলি হামলায় পাঁচ সাংবাদিক ও একজন অগ্নিনির্বাপক কর্মীসহ ২০ জন নিহত হন।

মন্ত্রণালয়টি জানায়, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী হাসপাতাল কমপ্লেক্সের একটি ভবনের চতুর্থ তলায় দুটি বিমান হামলা চালায়। দ্বিতীয় হামলাটি চালানো হয় যখন উদ্ধারকারী দল আহতদের উদ্ধার এবং নিহতদের মরদেহ সরানোর কাজ করছিল।

নিহত সাংবাদিকদের মধ্যে রয়টার্স সংবাদ সংস্থার ফটোসাংবাদিক হুসাম আল-মাসরি, কাতারভিত্তিক চ্যানেল আল জাজিরার আলোকচিত্রী মোহাম্মদ সালামা, দ্য অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের ফটোসাংবাদিক মারিয়াম আবু দাগ্গা, মোয়াজ আবু তাহা এবং আহমেদ আবু আজিজ রয়েছেন। আহমেদ আবু আজিজ তিউনিসিয়া ও মরক্কোর সংবাদমাধ্যমে প্রতিবেদক হিসেবে কাজ করতেন।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েল গাজায় প্রায় ৬৩ হাজার ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে। এই সামরিক অভিযানে পুরো উপত্যকা বিধ্বস্ত হয়েছে এবং সেখানে দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। গত নভেম্বরে, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের জন্য ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং তার সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। এছাড়া, আন্তর্জাতিক বিচার আদালতেও (আইসিজে) ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগে একটি মামলা চলমান রয়েছে।