গাজায় শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংসের পথে, স্কুলছাড়া সাড়ে ছয় লাখ শিশু

ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য জাতিসংঘের সংস্থা (ইউএনআরডব্লিউএ) গাজার শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। শনিবার এক বিবৃতিতে সংস্থাটি জানায়, ইসরায়েলের বিধ্বংসী আগ্রাসন প্রায় দুই বছর পূর্ণ হতে চলায় সাড়ে ছয় লাখেরও বেশি শিশু টানা তৃতীয় বছরের জন্য শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

ইউএনআরডব্লিউএ তাদের বিবৃতিতে জানায়, ‘গাজার যুদ্ধ শিশুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ এবং এটি অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। শিশুদের সর্বদা সুরক্ষা দিতে হবে।’ সংস্থাটি সতর্ক করে বলেছে, এই অঞ্চলের শিশুরা একটি ‘হারানো প্রজন্মে’ পরিণত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।

অধিকৃত পশ্চিম তীরে আগামী ১ সেপ্টেম্বর স্কুল খোলার কথা থাকলেও গাজার শ্রেণিকক্ষগুলো এখনো বন্ধ রয়েছে।

ফিলিস্তিনের শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, অবরুদ্ধ এই উপত্যকায় বোমাবর্ষণের কারণে প্রায় ৭ লাখ শিক্ষার্থীর পড়াশোনা স্থগিত হয়ে গেছে। ৭০ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী টানা দুই বছর উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি।

মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি বাহিনী তাদের নির্মম হামলায় গাজায় অন্তত ১৭ হাজার স্কুল শিক্ষার্থী এবং ১ হাজার ২০০ জনের বেশি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া আহত হয়েছে আরও হাজার হাজার শিক্ষার্থী। একই সময়ে অধিকৃত পশ্চিম তীরেও ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে কয়েক ডজন শিক্ষার্থী নিহত, আহত বা আটক হয়েছে।

এই নৃশংসতার শিকার হয়েছেন শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীরাও। গাজায় প্রায় ১ হাজার শিক্ষাকর্মী নিহত এবং ফিলিস্তিনের বিভিন্ন অঞ্চলজুড়ে আরও হাজার হাজার কর্মী আহত বা আটক হয়েছেন।

ইসরায়েলি বাহিনী ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় ৬৩ হাজার ৪০০ জনের বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে। এই সামরিক অভিযানে পুরো উপত্যকাটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে এবং অঞ্চলটি দুর্ভিক্ষের মুখে পড়েছে।

গত নভেম্বরে, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং তার সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। এ ছাড়া, গাজায় চালানো এই যুদ্ধের জন্য আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) ইসরায়েল একটি গণহত্যা মামলারও মুখোমুখি হয়েছে।