গ্রেপ্তার আতঙ্কে দ. আফ্রিকা সফর বাতিল করলেন ইসরায়েলের সাবেক কমান্ডার

গাজায় চালানো গণহত্যায় নিজের ভূমিকার জন্য গ্রেপ্তার হতে পারেন, এমন আশঙ্কায় ইসরায়েলের সাবেক এক সামরিক কমান্ডার তার দক্ষিণ আফ্রিকা সফর বাতিল করেছেন। স্থানীয় গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে জানা যায়, এই ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার (৩১ আগস্ট)।

ইসরায়েলের সরকারি গণমাধ্যম ‘কান’ জানিয়েছে, জিউইশ এজেন্সি ফর ইসরায়েলের প্রধান মেজর জেনারেল ডোরন আলমোগ তার পূর্বনির্ধারিত দক্ষিণ আফ্রিকা সফর বাতিল করেন। সেখানে তার স্থানীয় ইহুদি সম্প্রদায়ের সঙ্গে বৈঠক করার কথা ছিল।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের শেষের দিকে দক্ষিণ আফ্রিকা আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) ইসরায়েলের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করে। তেল আবিবের বিরুদ্ধে ১৯৪৮ সালের জাতিসংঘ গণহত্যা প্রতিরোধ সনদ লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা হয় এবং গাজায় গণহত্যা ও যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত করা হয়।

জিউইশ এজেন্সি ফর ইসরায়েলের নির্বাহী চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার আগে আলমোগ ২০০০ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর দক্ষিণাঞ্চলীয় কমান্ডের কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

জিউইশ এজেন্সি ফর ইসরায়েল একটি সরকারি সংস্থা, যা ১৯২৯ সালের আগস্টে জায়নবাদী আন্দোলনের নির্বাহী শাখা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইহুদি অভিবাসনকে উৎসাহিত করাই এর প্রধান কাজ।

এর আগেও ডোরন আলমোগ আইনি জটিলতার সম্মুখীন হয়েছিলেন। ২০০৫ সালে দক্ষিণ গাজার রাফাহ শহরে প্রায় ৫০টি ফিলিস্তিনি বাড়ি ধ্বংসের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে যুক্তরাজ্যে তার বিরুদ্ধে একটি গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছিল। তখন তিনি বিমান থেকে না নেমেই ইসরায়েলে ফিরতে বাধ্য হয়েছিলেন।

গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে বেশ কয়েকজন ইসরায়েলি কর্মকর্তা ও সৈন্য বিদেশের মানবাধিকার সংস্থাগুলোর দায়ের করা মামলার সম্মুখীন হচ্ছেন।

ইসরায়েল ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় ৬৩,৪০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে। এই ভয়াবহ সামরিক অভিযানে পুরো উপত্যকাটি বিধ্বস্ত হয়েছে এবং সেখানে দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

গত নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং তার সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। এছাড়া, গাজায় চালানো যুদ্ধের জন্য ইসরায়েল আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার মামলারও সম্মুখীন।