ভারত-চীন সম্পর্ক: প্রতিদ্বন্দ্বী নয়, অংশীদার হতে চায় দুই দেশ

উত্তেজনা ও সীমান্ত বিরোধকে পেছনে ফেলে ভারত ও চীন একে অপরকে এখন প্রতিদ্বন্দ্বী নয়, বরং অংশীদার হিসেবে দেখার ঘোষণা দিয়েছে। দুই দেশের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে আস্থা গভীর হচ্ছে এবং এর ফলস্বরূপ ২০২০ সালের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর স্থগিত থাকা দ্বিপাক্ষিক ফ্লাইটগুলো পুনরায় চালুর সিদ্ধান্ত হয়েছে। যদিও ফ্লাইট চালুর নির্দিষ্ট কোনো তারিখ এখনো ঘোষণা করা হয়নি।

গত রবিবার চীনের তিয়ানজিন শহরে শাংহাই সহযোগিতা সংস্থার (এসসিও) সম্মেলনের ফাঁকে এই গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে বসেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। এটি ছিল সাত বছর পর নরেন্দ্র মোদির প্রথম চীন সফর। বৈঠকে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বলেন, চীন-ভারত সম্পর্ককে কৌশলগত ও দীর্ঘমেয়াদি দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা উচিত। তিনি বলেন, ‘বন্ধু হওয়াই উভয় পক্ষের জন্য সঠিক পছন্দ’। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও জানান, দুই দেশের মধ্যে বর্তমানে শান্তি ও স্থিতিশীলতার পরিবেশ তৈরি হয়েছে।

এবারের এসসিও সম্মেলনে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনসহ ২০টিরও বেশি দেশের নেতারা অংশ নিয়েছেন। সম্মেলনটি এমন এক সময়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যখন যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে বাণিজ্যযুদ্ধ তীব্র আকার ধারণ করেছে। সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রুশ তেল আমদানি অব্যাহত রাখায় ভারতীয় পণ্যের ওপর উচ্চ শুল্ক আরোপ করেছেন। একইসঙ্গে ইউক্রেনে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার কারণে রাশিয়ার ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞার হুমকি দিয়ে রেখেছে পশ্চিমা দেশগুলো।

পশ্চিমা জোট ন্যাটোর প্রভাব মোকাবিলায় ২০০১ সালে চীন, রাশিয়া ও মধ্য এশিয়ার চারটি দেশ মিলে এসসিও গঠন করেছিল। বর্তমানে এই সংস্থার সদস্য সংখ্যা ১০ এবং এর সঙ্গে আরও ১৬টি পর্যবেক্ষক রাষ্ট্র যুক্ত রয়েছে।

এদিকে, সম্মেলন উপলক্ষে ১৩০ লাখ মানুষের শহর তিয়ানজিনজুড়ে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। শহরের প্রধান সড়ক ও ভবনগুলো বর্ণিল ব্যানার ও বিলবোর্ডে ছেয়ে গেছে। রাতের বেলায় নদীর তীরে মনোমুগ্ধকর আলোকসজ্জা উপভোগ করতে হাজারো মানুষ ভিড় করছেন। তবে উৎসবের পাশাপাশি শহরের কেন্দ্রীয় এলাকায় কড়া নিরাপত্তা ও সড়ক অবরোধের কারণে স্থানীয় বাসিন্দাদের চলাচলে কিছুটা ভোগান্তিও হচ্ছে। পুলিশ অপ্রয়োজনীয় ভ্রমণ এড়িয়ে চলতে এবং কাছের দোকান থেকে কেনাকাটার জন্য নাগরিকদের পরামর্শ দিয়েছে।