ট্রাম্পকে ইসরায়েলের ৫৫০ সাবেক কর্মকর্তার আহ্বান: গাজা যুদ্ধ বন্ধ করুন

গাজায় চলমান যুদ্ধ অবিলম্বে বন্ধ করতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ইসরায়েলের নিরাপত্তা সংস্থা ও কূটনৈতিক পদে দায়িত্ব পালন করা ৫৫০ জন সাবেক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা।

ইসরায়েলি দৈনিক মারিভ জানিয়েছে, ‘কমান্ডারস ফর ইসরায়েল’স সিকিউরিটি’ নামের একটি সংগঠনের পক্ষ থেকে ট্রাম্পকে এই চিঠি পাঠানো হয়েছে। সংগঠনটিতে ইসরায়েলের বিভিন্ন নিরাপত্তা সংস্থার প্রায় ৫৫০ জন সাবেক কর্মকর্তা ও কূটনীতিক যুক্ত রয়েছেন। এমন এক সময়ে এই চিঠিটি পাঠানো হলো, যখন গাজা শহর দখলের একটি সামরিক পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনার জন্য ইসরায়েলের নিরাপত্তা মন্ত্রিসভার বৈঠক বসার কথা রয়েছে।

ট্রাম্পকে লেখা চিঠিতে সাবেক কর্মকর্তারা উল্লেখ করেন, ‘ইসরায়েলের জনগণের সুস্পষ্ট সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ আমাদের অপহৃত ব্যক্তিদের অবিলম্বে মুক্তির জন্য যুদ্ধ শেষ করাকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে’।

তারা চিঠিতে আরও একটি বিকল্প শাসন ব্যবস্থা গঠনের আহ্বান জানান। তাদের প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে এমন আরব রাষ্ট্রগুলোকে নিয়ে একটি কর্তৃপক্ষ গঠন করা হোক, যারা এই অভিযানে সশস্ত্র বাহিনী পাঠানোসহ বিভিন্নভাবে অংশ নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। তবে এক্ষেত্রে ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অবিচ্ছেদ্য অধিকার অক্ষুণ্ণ রাখার কথাও বলা হয়েছে।

এই চিঠিতে স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে রয়েছেন ইসরায়েলের সাবেক সেনাপ্রধান, গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ ও শিন বেতের সাবেক পরিচালক, সাবেক পুলিশ কমিশনার এবং ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের সাবেক প্রধানেরা।

গত ১৮ আগস্ট, ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ গোষ্ঠী হামাস মিশরীয় ও কাতারি মধ্যস্থতাকারীদের দেওয়া একটি যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে সম্মতি জানায়। যদিও ইসরায়েল এই প্রস্তাবের কোনো জবাব দেয়নি, বরং প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গাজা শহর দখলের পরিকল্পনা নিয়ে অগ্রসর হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় প্রায় ৬৩,৫০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এই সামরিক অভিযানে সমগ্র উপত্যকাটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে এবং সেখানে দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

গত নভেম্বরে, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের জন্য নেতানিয়াহু এবং তার সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। এছাড়া, উপত্যকায় চালানো অভিযানের জন্য ইসরায়েল আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার মামলারও মুখোমুখি হয়েছে।