পশ্চিম তীরে ইসরায়েলের ব্যাপক গ্রেপ্তার অভিযান, হেবরনের মেয়র আটক

ইসরায়েলি বাহিনী অধিকৃত পশ্চিম তীরে ব্যাপক ধরপাকড় অভিযান চালিয়েছে। এই অভিযানে হেবরনের মেয়রসহ ফিলিস্তিনের বিভিন্ন শহরের বাসিন্দাদের আটক করা হয়েছে। মঙ্গলবার এক সরকারি বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, অধিকৃত পশ্চিম তীরের উত্তরাঞ্চলের নাবলুস গভর্নরেট থেকে ১৩ জনকে ইসরায়েলি বাহিনী আটক করেছে। তারা আরও জানান, নাবলুসের কাফর কালিল গ্রামে ইসরায়েলি বাহিনীর মারধরের শিকার হয়ে এক ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন, যাকে পরে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

স্থানীয় সূত্রের বরাতে জানা যায়, উত্তরাঞ্চলীয় শহর কালকিলিয়া থেকে আরও দুজনকে এবং মধ্য পশ্চিম তীরের রামাল্লা থেকে একজনকে আটক করা হয়েছে।

হেবরন পৌরসভা এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, মঙ্গলবার ভোরে মেয়র তাইসির আবু স্নেনাহকে তার বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের আগে বিপুল সংখ্যক ইসরায়েলি সেনা তার বাড়িতে অভিযান চালায় এবং ভাঙচুর করে।

পৌরসভা জানায়, এই নৃশংস হামলা শুধু মেয়রের ওপর নয়, বরং হেবরনের জনগণের ইচ্ছাশক্তি এবং তাদের নির্বাচিত প্রতিষ্ঠানের ওপরও চালানো হয়েছে। এই ঘটনাকে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া এবং জনগণের স্বাধীনভাবে শহর পরিচালনার অধিকারের ওপর একটি নির্লজ্জ আক্রমণ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে।

এই গ্রেপ্তারের জন্য পৌর পরিষদ ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষকে সম্পূর্ণভাবে দায়ী করেছে। একইসঙ্গে মেয়রের অবিলম্বে মুক্তি এবং শহরের নেতা ও নাগরিকদের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের ক্রমবর্ধমান সহিংসতা বন্ধে চাপ প্রয়োগের জন্য আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর প্রতি তাদের আইনি ও নৈতিক দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানিয়েছে।

ফিলিস্তিনি সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ইসরায়েল বর্তমানে তাদের কারাগারে প্রায় ১০ হাজার ৮০০ ফিলিস্তিনিকে আটকে রেখেছে। এর মধ্যে প্রায় ৪৫০ জন শিশু, ৫০ জন নারী এবং ৩ হাজার ৬২৯ জন প্রশাসনিক বন্দী রয়েছেন। এই পরিসংখ্যানে গাজা থেকে গুম হওয়া হাজার হাজার ফিলিস্তিনির হিসাব অন্তর্ভুক্ত নয়।

ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি বাহিনী এবং অবৈধ বসতি স্থাপনকারীদের হাতে পশ্চিম তীরে অন্তত ১ হাজার ১৬ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৭ হাজারেরও বেশি আহত হয়েছেন।

উল্লেখ্য, গত জুলাই মাসে আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে) এক ঐতিহাসিক রায়ে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরায়েলের দখলদারিত্বকে অবৈধ ঘোষণা করে। একইসঙ্গে পশ্চিম তীর এবং পূর্ব জেরুজালেম থেকে সমস্ত বসতি সরিয়ে নেওয়ার দাবি জানায় আদালত।