পাঁচ দিনের ইসরায়েল সফর নিয়ে বিপাকে ব্রিটিশ আইনপ্রণেতা

ইসরায়েলপন্থী একটি লবি গোষ্ঠীর অর্থায়নে করা পাঁচ দিনের সফরের তথ্য গোপন করে সংসদীয় নিয়ম ভেঙেছেন যুক্তরাজ্যের লেবার পার্টির একজন সংসদ সদস্য (এমপি)। এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

চলতি বছরের মে মাসে তিনি ওই সফরে গিয়েছিলেন। সংসদের স্ট্যান্ডার্ড কমিশনার জানিয়েছেন, ব্যুরি সেন্ট এডমন্ডস ও স্টোমার্কেটের ৬৭ বছর বয়সী এমপি পিটার প্রিন্সলি হাউস অব কমন্সের নির্ধারিত ২৮ দিনের মধ্যে সফরের বিষয়ে তথ্য নিবন্ধনে ব্যর্থ হয়েছেন। এর মাধ্যমে তিনি সদস্যদের জন্য প্রযোজ্য আচরণবিধির ৫ নম্বর ধারা লঙ্ঘন করেছেন।

অনুসন্ধানী সংবাদমাধ্যম ‘ডিক্লাসিফায়েড ইউকে’-এর একটি প্রতিবেদনের পর গত ২৪ জুলাই কমিশনার এ বিষয়ে তদন্ত শুরু করেন। প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলপন্থী লবি গোষ্ঠী ‘লেবার ফ্রেন্ডস অব ইসরায়েল’ (এলএফআই)-এর আয়োজনে ও অর্থায়নে গত ২৫ থেকে ২৯ মে পর্যন্ত অন্য সংসদ সদস্যদের সঙ্গে পিটার প্রিন্সলি ইসরায়েল সফর করেন, কিন্তু সফরের তথ্য তিনি সময়মতো নিবন্ধন করেননি।

কমিশনার ড্যানিয়েল গ্রিনবার্গের ২৯ আগস্টে প্রকাশিত ১৩ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, প্রিন্সলি তার এই ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চেয়েছেন।

প্রতিবেদনে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, গত ৭ আগস্ট গ্রিনবার্গকে লেখা এক চিঠিতে প্রিন্সলি বলেন, ‘ভবিষ্যতে যেন সময়মতো তথ্য নিবন্ধন করা হয়, তা নিশ্চিত করতে আমি এবং আমার দপ্তর প্রয়োজনীয় প্রশাসনিক পদক্ষেপ নেব।’

এলএফআই নিয়মিতভাবে সংসদ সদস্য, উচ্চকক্ষের সদস্য ও সাংবাদিকদের ইসরায়েল সফরে নিয়ে যায়। তাদের ভাষ্যমতে, গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলার মধ্যে ‘সংহতি প্রকাশ’ করাই এসব সফরের উদ্দেশ্য। উল্লেখ্য, গাজার ফিলিস্তিনিরা বর্তমানে ইসরায়েলের সৃষ্ট দুর্ভিক্ষের শিকার। গত ২২ আগস্ট জাতিসংঘের সমর্থিত ক্ষুধা পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা ‘ইন্টিগ্রেটেড ফুড সিকিউরিটি ফেজ ক্লাসিফিকেশন’ গাজায় দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি বিদ্যমান থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েল গাজায় ৬৩ হাজার ৬০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে। এই বর্বরোচিত সামরিক অভিযানে উপত্যকাটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে এবং সেখানে দুর্ভিক্ষ চলছে। গত নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের জন্য ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং তার সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। এছাড়া, উপত্যকায় চালানো এই নৃশংসতার জন্য ইসরায়েল আন্তর্জাতিক বিচার আদালতেও (আইসিজে) গণহত্যার মামলার মুখোমুখি হয়েছে।